ভারতীয় ভিসা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে জটিলতা নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, ‘আমাদের দেশের মানুষের সামর্থ্য বেড়েছে, সেজন্য তারা বিদেশে যায়। কেউ ভারতে যায় বেড়াতে, কেউ যায় চিকিৎসা করাতে আবার কেউ যায় পড়াশোনা করতে। সবকিছু মিলিয়েই গত ২৩ সালে তারা ১৬ লাখের বেশি মানুষকে ভিসা দিয়েছে। ভবিষ্যতে তারা এটাকে আরও সহজ করার কথা চিন্তাভাবনা করছে।’

মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দপ্তরে সাক্ষাৎ করতে আসেন ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এ কথা বলেন।  

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তারা আমাদের আগেই জানিয়েছিলেন... তাদের স্টাফ অফিসার কম, সেজন্য তারা অ্যাপয়েন্টমেন্টটা একটু দেরিতে দিচ্ছেন। তারপরও তিনি (ভারতীয় হাইকমিশনার) জানালেন যে, ২০২৩ সালে ১৬ লাখের বেশি লোককে তারা নতুন ভিসা দিয়েছেন। তারা একদিনে সর্বোচ্চ ৭ হাজার পর্যন্ত ভিসা দিয়েছেন।’

আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘বিএসএফ-বিজিবি সম্পর্কটা যেন আরও ভালো হয়, সে বিষয়ে বলা হয়েছে। তাদের সাইবার সিকিউরিটি, সাইবার ফরেনসিক নিয়ে আরও ট্রেনিং দেওয়ার জন্য বলেছি। তারা সহযোগিতা করবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন। তাদের সঙ্গে সম্পর্ক আরও কীভাবে ভালো করা যায়, সেই বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। ন্যাশনাল ক্রাইম, বর্ডার ক্রাইম, বাউন্ডারি ক্রাইম, অরগানাইজ ক্রাইম এগুলো যত কমানো যায়, এটা নিয়ে যাতে ইন্টেলিজেন্স শেয়ারিং হয়... সেগুলো নিয়ে আমরা কথা বলেছি। এগুলো নিয়ে সবসময় আমরা কথা বলে থাকি। ভারতের সাপোর্ট আমরা সবসময়ই পেয়ে থাকি।’ 

‘দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বাড়াতে কার্যকর ভূমিকা নেবে ভারত। বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রশিক্ষণের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভারতের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে কাজ করবে ভারত সরকার।’

বিএনপি বলছে আওয়ামী লীগ বিদেশিদের ওপর ভর করে ক্ষমতায় এসেছে। এ বিষয়ে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন তারা বিদেশিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছে... স্যাংশন দিয়ে ফেলল, কতকিছু করে ফেলল! সবকিছুতে ফেল করে তারা এখন উল্টো কথা বলছে। তারা কতকিছু করল... আমাদের নিয়ে কতকিছু করার জন্য কত দেশের হাতে-পায়ে ধরল! এগুলো হাস্যকর বিষয়।’

ধারণা ছিল নির্বাচনের পর বিদেশিদের সঙ্গে সম্পর্কে একটু ভাটা পড়তে পারে। আপনার কী মনে হচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাপে পড়ব কেন? আমাদের দেশ স্বাধীন দেশ। বঙ্গবন্ধুর নীতি সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে শত্রুতা নয়। সেই নীতি আমরা অনুসরণ করছি। ‌আমরা মনে করি সবাই আমাদের বন্ধু। ‌কেউ যদি অন্য কিছু মনে করে, সেটি সম্পর্কে আমাদের কিছু বলার নেই।’

বিদেশ থেকে চাপ আসতে পারে বলে কী সরকার মনে করছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি তো দেখছি না, আপনি কোথায় দেখছেন? আমি তো জানি না। আমাদের কাছে কোনো চাপ নেই। সারা দেশে আলোচনা হচ্ছে। অনেকেই অনেক কিছু বলে, সে সমস্ত আলোচনার কোনো মানে নেই।’

সামনে কী চ্যালেঞ্জ মনে করছেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার কাছে কোনো চ্যালেঞ্জ নেই। আমি মনে করি প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ সুন্দরভাবে এগিয়ে চলছে। এটি কন্টিনিউ হবে।’

ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেন, নিরাপত্তা, অর্থনীতি ও যোগাযোগসহ দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আগামী পাঁচ বছর এই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে।

এমএম/কেএ