বিগত ২০০২ সালে কর্তব্যরত আনসার সদস্যকে গুলি করে হত্যায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত ও পুলিশ সদস্যকে হত্যাচেষ্টার দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক সন্ত্রাসী শুক্কুর আলী ওরফে সোহেল ওরফে সোহাগকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-১০। রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) তাকে সাভার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, বিগত ২০০২ সালের ১২ মার্চ রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শ্যামলী এলাকায় ছিনতাইকারীদের গুলিতে কর্তব্যরত অবস্থায় আনসার সদস্য ফজলুল হক গুলিবিদ্ধ হন। এছাড়া এ ঘটনায় একজন পুলিশ সদস্য গুরুতর জখম হন। পরে তাদের চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আনসার সদস্য ফজলুল হককে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় পুলিশ কনস্টেবল আকমান হোসেন বাদী হয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় সন্ত্রাসী শুক্কুর আলী ওরফে সোহেলসহ ৩ জনের নামে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার বিষয়টি জানতে পেরে আসামিরা আত্মগোপনে চলে যায়। পরে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে। এরপর শুক্কুরসহ গ্রেপ্তার বাকি আসামিরা জামিনে মুক্ত হয়ে আবার আত্মগোপনে চলে যায়।

তিনি বলেন, এদিকে মামলার তদন্ত শেষে ২০০৩ সালের ৩১ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। মামলার বিচার কাজ শেষে ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩ আসামিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আদালত। একই মামলায় পুলিশ কনস্টেবল আবদুল জলিল ফরাজীকে হত্যাচেষ্টায় আসামি শুক্কুর আলী ওরফে সোহেলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ছয় মাস সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন আদালত।

গ্রেপ্তার শুক্কুর আলী জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, হত্যাকাণ্ডের দিন দুপুরে শুক্কুর আলী তার অপর দুই সহযোগীদের নিয়ে ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে শ্যামলীর ‘দূর দূরান্ত’ নামক একটি বাস কাউন্টারের সামনে অবস্থান করে। পরে শুক্কুর আলী ও তার সহযোগীরা মিলে অজ্ঞাত একজন ভিকটিমকে ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। তখন ঐ এলাকায় কর্তব্যরত পুলিশ কনস্টেবল আকমান হোসেন, কনস্টেবল আব্দুল জলিল ফরাজী ও আনসার সদস্য ফজলুল হক দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে ছিনতাইকারী শুক্কুর আলীসহ ৩ জনকে আটকের চেষ্টা করে।

এসময় শুক্কুর আলী ও তার অপর সহযোগীরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের কাছে থাকা রিভলভার দিয়ে এলোপাথাড়ি গুলি করে। এতে আনসার সদস্য ফজলুল হক গুলিবিদ্ধ হয় এবং একজন পুলিশ সদস্যকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে। এসময় অপর পুলিশ সদস্য আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি করলে শুক্কুর আলী ও তার অন্যান্য সহযোগীরা কৌশলে ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যায়।

শুক্কুর আলী এর আগে মাদক সংক্রান্ত মামলায় প্রায় ৪ বছর, অস্ত্র সংক্রান্ত মামলায় প্রায় ৫ বছর ও অপহরণসহ বিভিন্ন মামলায় নানা মেয়াদে কারাভোগ করেছে বলে জানা যায়। তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় অস্ত্র, ডাকাতি ও মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধে ১৫টির অধিক মামলা রয়েছে।

এমএসি/পিএইচ