মাঠ-পার্ক-উন্মুক্ত স্থান সংরক্ষণে দ্রুত উদ্যোগ জরুরি
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ডিটেল এরিয়া প্ল্যানে (ড্যাপ) চিহ্নিত মাঠ-পার্ক-উন্মুক্ত স্থান সংরক্ষণের দ্রুত উদ্যোগ জরুরি বলে উল্লেখ করেছে আলোচকরা।
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের কৈবর্ত সভাকক্ষে আয়োজিত ‘বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় চিহ্নিত মাঠ-পার্ক ও উন্মুক্ত স্থান সংরক্ষণে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
আলোচকরা বলেন, ঢাকার উভয় সিটি কর্পোরেশনেই মাঠ-পার্কের ঘাটতি রয়েছে। দুই সিটি কর্পোরেশনের ৪১টি ওয়ার্ডে কোনো খেলার মাঠ নেই। অথচ প্রতি সাড়ে বারো হাজার মানুষের জন্য ২-৩টি খেলার মাঠ দরকার। এ বিষয়টি বিবেচনায় বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় ৫টি আঞ্চলিক পার্ক, ৫৫টি জলকেন্দ্রিক পার্ক, ১৪টি ইকোপার্ক এবং ১১টি অন্যান্য পার্ক তৈরির প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। ড্যাপে সুস্পষ্টভাবে চিহ্নিত থাকা স্বত্বেও বিভিন্ন মাঠ-পার্ক-জলাশয়-ঝিল দখলদারিত্বের শিকার হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষদের বাস্তবায়নে সচেষ্ট হতে হবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির আইনজীবী মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ আল গালিব বলেন, মহানগরী, বিভাগীয় এবং জেলা শহরসহ দেশের সব শহরাঞ্চলের খেলার মাঠ, উন্মুক্ত স্থান, পার্ক এবং প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন, ২০০০ অনুযায়ী— মাস্টারপ্ল্যানে মাঠ-উদ্যান বা জলাশয় হিসেবে চিহ্নিত থাকলে কোনো অবস্থাতেই এর চরিত্র পরিবর্তন করা যাবে না। কিন্তু এ আইন প্রতিনিয়ত ভঙ্গ হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
আইপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম বলেন, ঢাকা শহরের মাত্র ১৬ শতাংশ মানুষের খেলার মাঠে প্রবেশগম্যতা রয়েছে। বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় উল্লিখিত ৬টি অঞ্চলে শুধু কেন্দ্রীয় অঞ্চলে আঞ্চলিক পার্ক আছে। বাকি ৫টি অঞ্চলে কোনো আঞ্চলিক পার্ক নেই। ঢাকা মহানগরে উন্মুক্ত স্থান ১ শতাংশের নিচে। ড্যাপে বলা হয়েছে— ব্লকভিত্তিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে ব্লকের আয়তন অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট শতাংশ এলাকা উন্মুক্ত স্থানের জন্য বরাদ্দ করতে হবে।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মাকসুদ হাসেম বলেন, গণপরিসর বা পাবলিক স্পেসের ম্যানেজমেন্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পাবলিক স্পেসগুলোকে সম্পূর্ণভাবে ঘেরাও করে ফেলা উচিত নয়। এর মাধ্যমে মাদক সেবন, বিভিন্ন সামাজিক অপরাধের আশঙ্কা বাড়ে।
ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী বলেন, আমাদের নগর পরিকল্পনায় শিশু, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বা নারীদের চাহিদার প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় নেওয়া হয় না। আমরা শিশুদের শারীরিক-মানসিক বিকাশকে গুরুত্ব দিচ্ছি না বরং খেলার মাঠগুলোকে বাণিজ্যিকীকরণ করছি।
এএসএস/এমজে