দেশে সর্বপ্রথম জেসিআই স্বীকৃতি পাওয়া হাসপাতাল হিসেবে সফলভাবে ১০০তম বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট (বিএমটি) সম্পন্ন করেছে এভারকেয়ার হসপিটাল। যা দেশের স্বাস্থ্য খাতে একটি বড় মাইলফলক বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

সোমবার (১১ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর এভারকেয়ার হসপিটালে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন হসপিটালের হেমাটোলজি ও স্টেম সেল ট্রান্সপ্ল্যান্ট বিভাগের কোঅর্ডিনেটর ও সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহ। 

তিনি বলেন, বিগত কয়েক বছর ধরে এভারকেয়ার হসপিটাল সফলভাবে অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন করে আসছে। বিএমটি এমন একটি ঝুঁকিপূর্ণ চিকিৎসা পদ্ধতি যেখানে আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। তাই এর বাস্তবায়ন করতে পারা আমাদের কাছে একটি বড় সাফল্য। শতকের ঘর পূর্ণ করতে পেরে এভারকেয়ার হসপিটালের পাশাপাশি আমি ব্যক্তিগতভাবে বেশ আনন্দিত।

ডা. আবু জাফর বলেন, ডেডিকেটেড বিএমটি ইউনিট ও লিউকেমিয়া ইউনিট সংবলিত এভারকেয়ার হসপিটাল বিভিন্ন ধরনের লিউকেমিয়া মোকাবিলায় সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত। এখানে ফুল ম্যাচ ও হাফ ম্যাচ (হ্যাপলো) পদ্ধতিতে অটোলগাস ও অ্যালোজেনিক অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন করা হয়। 

সেইসঙ্গে হসপিটালে একটি স্টেম সেল প্রক্রিয়াকরণ ল্যাব, ক্রায়োপ্রিজারভেশন ফ্যাসিলিটি, আউটপেশেন্ট ও ইনপেশেন্ট প্রসিডিওর রুম, দ্রুত ও সঠিক রোগ নির্ণয়ের জন্য ইন-হাউজ মলিকিউলার ডায়গনস্টিক ফ্যাসিলিটি, সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহসহ বিএমটি শয্যা, হেপা ফিল্টার এবং রিভার্স অসমোসিস ওয়াটার পিউরিফিকেশনের মতো বিশেষ সিস্টেম রয়েছে।

তিনি বলেন, এখানে একটি মলিকিউলার ল্যাব রয়েছে যা ক্যান্সারের সূত্রপাত নির্ণয়ের জন্য ফ্লো সাইটোমেট্রির অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে। এছাড়া রোগীর অবস্থার দ্রুত ও সঠিক মূল্যায়ন করার জন্য সাবটাইপিং, ভিত্তিক পিএনএইচ, ইমিউনো-হিষ্টোকেমিস্ট্রি, পেট-স্ক্যান মতো পরিষেবাগুলোও রয়েছে এই হসপিটালে।

এসময় এভারকেয়ার হসপিটাল বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. রত্নদীপ চাস্কার বলেন, দেশের জনগণের সেবায় আমরাই প্রথম হাসপাতাল যারা বিএমটির জন্য অত্যাধুনিক, প্রয়োজনীয় ও উন্নত যন্ত্রপাতি নিয়ে এসেছি। বাংলাদেশের জনগণকে সুচিকিৎসা প্রদান করা আমাদের লক্ষ্য। রোগীদের কাছ থেকে পাওয়া আস্থা ও সমর্থন আমাদের উপমহাদেশের সেরাদের মধ্যে একটি হতে প্রেরণা দেয় এবং আমরা তা অর্জনেরই সর্বোত্তম প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

হাসপাতালের মেডিকেল সার্ভিসেসের ডিরেক্টর ডা. আরিফ মাহমুদ বলেন, আগে রোগীদের বিএমটির জন্য দেশের বাইরে যাওয়া লাগতো যা এখন দেশে বসেই পাচ্ছেন। এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকায় বিএমটি চিকিৎসার জন্য ডা. সালেহের নেতৃত্বে আমাদের রয়েছে অত্যন্ত দক্ষ ক্লিনিক্যাল টিম। আমাদের বিএমটি চিকিৎসায় সাফল্যের হার উন্নত দেশের মতোই।

তিনি বলেন, একটি সম্পূর্ণ সজ্জিত লিউকেমিয়া ইউনিট, বিএমটি ইউনিট ও সুচিকিত্সা পরিকল্পনা আমাদেরকে ক্যান্সারে জীবন হারানোর ভয়ের সঙ্গে লড়াইরত আরও অনেক রোগীদের সাহায্য করতে উদ্বুদ্ধ করবে বলে আমরা আশাবাদী।

টিআই/এমএসএ