সড়কে বেড়েছে গাড়ির চাপ

সোমবার দুপুর ১২টা। রাজধানীর কারওয়ান বাজার সার্ক ফোয়ারার সামনে ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল মো. কামরুজ্জামান একাই সামলাচ্ছেন গাড়ির গতিবিধি। গণপরিবহন ছাড়া কমবেশি সব ধরনের যানবাহনকে যেতে দেওয়া হচ্ছে। 

কারও কাছে মুভমেন্ট পাস কিংবা সড়কে বের হওয়ার কারণ জানতে চাওয়া হচ্ছে না। অথচ গতকালও এই সার্ক ফোয়ারার চেক পোস্টে পুলিশি পাহারা ছিল চোখের পড়ার মতো। 

সকাল থেকে গাড়ির চাপ খুব বেড়েছে জানিয়ে ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘আজ সকালের দিকে গাড়িগুলো চেক করা হলেও এখন গরমের কারণে সেই অর্থে পারা যাচ্ছে না। তাছাড়া রাস্তায় এত গাড়ি যে সব চেক করা সম্ভবও হবে না।’

কামরুজ্জামানের সঙ্গে আলাপ শেষে এই চেক পোস্টের দায়িত্বে থাকা এক পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষ তো মানছেন না। যার দরকার তিনিও বের হচ্ছেন, যাদের দরকার নেই তারাও বের হচ্ছেন। আজ সকালে কয়েকজনের কাছে জানতে চাইলে তারা শপিংয়ের কারণ দেখিয়েছেন। এভাবে একেকজন একেক কারণ দেখাচ্ছেন, আপনি কয়জনকে আটকাবেন?’

সারাদেশে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধের দ্বিতীয় দফা শেষ হতে আরও দুদিন বাকি। তবে এরই মধ্যে রাজধানীজুড়ে বিধিনিষেধ ‘ফিকে’ হয়ে গেলেও আজ সোমবারের (২৬ এপ্রিল) পরিস্থিতি একেবারে ভিন্ন। সড়কের অবস্থান দেখে বোঝার উপায় নেই বিধিনিষেধ এখনও চলমান রয়েছে।

রাজধানীর কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর, পান্থপথ, ও কলাবাগান সড়কের চেক পোস্টগুলোতে দেখা যায়, সড়কে অতিরিক্ত গাড়ির চাপ থাকায় তল্লাশি ছাড়াই যেতে দেওয়া হচ্ছে যার যার গন্তব্যে। 

এদিকে, রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ থেকে রাজধানীর দোকানপাটসহ মার্কেটগুলো খুলে দেওয়ায় মানুষের চাপ বেড়েছে অনেকখানি। 

পান্থপথে কথা হয় মিরাজ নামের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে। তিনি জানান, বসুন্ধরা সিটিতে শপিং করার উদ্দেশে তিনি বাসা থেকে বের হয়েছেন। তবে মুভমেন্ট পাস ছাড়াই তিনি বের হয়েছেন। মিরাজের মত আরও অনেকের সঙ্গে কথা হলে তারাও জানান মুভমেন্ট পাস ছাড়াই বের হয়েছেন।

ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে গিয়ে দেখা যায়, সড়কজুড়ে রিকশা, ব্যক্তিগত গাড়ি, ভ্যান, অটো, মোটরসাইকেলের চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চেক পোস্টে থাকা পুলিশ কর্মকর্তারা। 

ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট রেজওয়ান বলেন, ‘গাড়ির চাপ আজ খুব বাড়ছে। যতটা পারা যায়, চেক করা হচ্ছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, সব চেক করতে গেলে জ্যাম লেগে যাচ্ছে। এমনিতেই গাড়ির চাপে ছোট আকারের জ্যাম লেগে যাচ্ছে।’

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত ৫ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত এক সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল সরকার। পরে তা শিথিল করে শুধুমাত্র সিটির মধ্যে সীমিত আকারে যান চলাচল ও নির্দিষ্ট সময়ের জন্য খুলে দেওয়া হয় শপিংমল।

তবে ১৪ এপ্রিল থেকে আবারও সাত দিনের বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। তখন গণপরিবহন একেবারে বন্ধ রাখা হয়। পরে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সুপারিশক্রমে এর মেয়াদ ২৮ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত বর্ধিত করে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

এনআই/আরএইচ