নির্বাচন কমিশনে (ইসি) কর্মরতদের করোনাযুদ্ধের ফ্রন্টলাইনার হিসেবে হাসপাতাল সেবা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ইসির মাঠ কর্মকর্তারা। তারা বলেন, প্রশাসন, পুলিশসহ অনেক ফ্রন্টলাইনাররা করোনা পরিস্থিতিতে দায়িত্বপালনরত অবস্থায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে হাসপাতাল সাপোর্ট পাচ্ছেন। আমরাও নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে জরুরি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সেবা দিচ্ছি। আমরা অনেকে দুর্গম অঞ্চলেও কাজ করছি। এজন্য ফ্রন্টলাইনার হিসেবে হাসপাতাল সাপোর্ট চাই। 

কর্মকর্তারা বলেন, করোনার কারণে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধের মধ্যে জরুরি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সেবা দিয়ে যাচ্ছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা। জরুরি এই সেবা চালু রাখার জন্য ইতোমধ্যে মাঠপর্যায়ে নির্দেশনাও দিয়েছে কমিশন। তাই করোনাকালে ইসির মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে প্রয়োজনে জরুরি হাসপাতাল সেবা পাওয়ার দাবি উঠেছে। 

এ প্রসঙ্গে উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসার ও সমপদের কল্যাণ পরিষদের সদস্য সচিব ও উত্তরা থানা নির্বাচন অফিসার নজরুল ইসলাম জানান, করোনাকালে আমরাও জরুরি সেবা চালু রেখেছি। তাই মাঠপর্যায়ে কেউ করোনা আক্রান্ত হলে তাদের পাশে থাকার জন্য কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।
 
তিনি বলেন, পরিষদের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের কেউ করোনা আক্রান্ত হলে তার খোঁজ নেওয়া ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কমিশন সচিবালয়, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ, নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ও দশটি আঞ্চলের উপজেলা/থানা নির্বাচন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে তদারকি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, কমিশনের আওতাধীন মাঠপর্যায়ে উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসার ও সমপদের অফিসাররা স্মার্টকার্ড বিতরণ, নতুন ভোটার অন্তর্ভূক্তকরণ, ভোটার স্থানান্তর ও এনআইডি সংশোধনের কাজে সরাসরি সম্পৃক্ত হয়ে সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে দেশকে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। এনআইডি করোনা টিকা নেওয়ার প্রধান অনুসঙ্গ হওয়ায় বর্তমানে জনসাধারণের সংস্পর্শে এসে এই সেবা দিতে হচ্ছে। আর এজন্য যথাযথভাবে সুরক্ষাসামগ্রী ব্যবহারের পরও অনেকেই করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। এরই মধ্যে দুই জন সহকর্মী মারাও গেছেন। তাই করোনা আক্রান্ত হলে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে যাতে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায় সেজন্য এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। 

ইসির একজন জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও একজন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এখন পর্যন্ত শতাধিক কর্মকর্তা ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন জানা গেছে। 

এ প্রসঙ্গে ইসির যুগ্মসচিব ও পরিচালক (জনসংযোগ) এসএম আসাদুজ্জামান বলেন, কমিশন থেকে জরুরি হাসপাতাল সেবা না থাকলেও করোনাকালে চিকিৎসা ও পরামর্শ দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে আমাদের ডাক্তার রাখা আছে। কেউ করোনা আক্রান্ত হলে আমাদের এসব ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে পারেন। এছাড়া কমিশন সচিবালয়সহ মাঠপর্যায়ের সব কর্মকর্তা নির্বাচন কমিশনের জন্যই কাজ করে যাচ্ছেন। তাই তাদের যে কেউ যদি কোনো সমস্যায় পড়েন এবং তা কমিশনকে জানান, তাহলে কমিশন অবশ্যই তার ব্যবস্থা নেবে। কমিশন সবসময় কর্মকর্তাদের পাশে আছে।    

এসআর/এইচকে