শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের বিষয়ে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ অমান্য করে তীব্র গরমের মধ্যেই আজ খোলা ছিল চট্টগ্রামের বেশিরভাগ সরকারি ও বেসরকারি স্কুল। এসব স্কুলে তীব্র গরমের মধ্যেই ক্লাস চলেছে। অবশ্য শিক্ষার্থীর উপস্থিতি স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় কিছুটা কম ছিল।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সরেজমিনে চট্টগ্রাম নগরীর ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মুসলিম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি হাজি মুহাম্মদ মহসিন উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয়, বেসরকারি শাহ ওয়ালি উল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখতে দেখা গেছে।

কেন হাইকোর্টের আদেশ মানা হলো না? এমন প্রশ্নের জবাবে চট্টগ্রাম সরকারি কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমরা বুঝে উঠতে পারিনি। মর্নিং শিফটের বিষয়ে আমরা বুঝে উঠতে না পারলেও ডে শিফটের বিষয়ে আমরা বুঝেছি। এ কারণে ডে শিফটের শিক্ষার্থীদের ছুটি দিয়ে দিয়েছি।

গভমেন্ট মুসলিম হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোরশেদুজ্জামান স্কুল খোলা রাখার বিষয়ে মোবাইলে মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য প্রতিবেদককে তিনি অফিসে যেতে বলেন।

আদালতের আদেশ না মানার বিষয়ে জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আখতার কবির চৌধুরী বলেন, দেশে সংবিধান বলবৎ আছে। বহাল রয়েছে সংসদও। ছোট ছোট শিশু শিক্ষার্থীদের রক্ষার জন্য হাইকোর্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার আদেশ দিয়েছিলেন। জীবন রক্ষার সেই আবেদনকে নিয়েও তামাশা হলো। আদালতের ওপরও ক্ষমতা দেখানো হলো। এটা আদালত অবমাননা। 

তিনি বলেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ হয়ত বলবে, তারা আদেশের কপি পায়নি। মিডিয়ার এ যুগে এটা বলার একদম সুযোগ নেই।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে শিক্ষকসহ কয়েকজনের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে গণমাধ্যমে আসা বিভিন্ন প্রতিবেদন নজরে আনা হলে শুনানি নিয়ে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল এবং মাদ্রাসার ক্লাস আগামী বৃহস্পতিবার (২ মে) পর্যন্ত বন্ধ রাখার আদেশ দেন।

তীব্র তাপদাহে বাড়ছে হিট স্ট্রোক: শিক্ষকসহ ১২ জনের মৃত্যু’, ‘হিট স্ট্রোকে একদিনে ১৮ জনের মৃত্যুর রেকর্ড’ ও ‘দাবদাহের বিপদে রাজধানী’ শিরোনামে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ আদালতের নজরে এনে শুনানি করেন আইনজীবী মনির উদ্দিন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান। এরপর উল্লিখিত সিদ্ধান্ত আসে হাইকোর্ট থেকে। 

কেএ