২১ হাজার ২৬০ কেজি ভেজাল, নষ্ট ও মেয়াদোত্তীর্ণ খেজুর জব্দ করা হয়েছে/ ছবি- ঢাকা পোস্ট

ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ খেজুর মজুদ ও বাজারজাতকরণের অভিযোগে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকার প্যারামাউন্ড কোল্ড স্টোরেজে অভিযান পরিচালনা করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। অভিযানে ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ খেজুর মজুদ ও বাজারজাতকরণের অভিযোগে ৬ প্রতিষ্ঠানকে ১৭ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। 

এছাড়া ২১ হাজার ২৬০ কেজি ভেজাল, নষ্ট ও মেয়াদোত্তীর্ণ খেজুর জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছেন র‍্যাব পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত।

মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) রাত আটটার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানীর তেজগাঁও লাভ রোড সংলগ্ন কোল্ড স্টোরেজে অভিযান শুরু করে র‍্যাব-২ এর একটি দল। রাত ১১টা পর্যন্ত চলা অভিযানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাজহারুল ইসলাম। 

৬ প্রতিষ্ঠানকে ১৭ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে/ ছবি- ঢাকা পোস্ট

অভিযান সম্পর্কে র‍্যাব-২ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) এএসপি মো. আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, র‍্যাব-২ গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী রমজান উপলক্ষে বিভিন্ন ধরনের ভেজাল, মেয়াদোত্তীর্ণ, নষ্ট খেজুর মজুদ এবং বাজারজাত করে আসছে। গোয়েন্দা নজরদারির ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধির সহযোগিতায় রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা এলাকায় অবস্থিত প্যারামাউন্ড কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডে অভিযান চালানো হয়।

অভিযানে দেখা যায়, বেশিরভাগ খেজুরের প্যাকেট, কার্টুনে আমদানিকারকের বিস্তারিত তথ্য নেই। মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ আলাদাভাবে বসিয়ে নতুনভাবে কার্টুনে সাঁটানো হয়েছে। বেশ কিছু কার্টুনে উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখই নেই। 

নষ্ট ও ভেজাল খেজুর উদ্ধার/ ছবি- ঢাকা পোস্ট

কোল্ড স্টোরেজে রক্ষিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পণ্যের গুণগত মান যাচাইকালে নষ্ট, ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ খেজুর মজুদ ও বাজারজাতকরণের অপরাধে ৬টি প্রতিষ্ঠানের মালিককে ১৭ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

এরমধ্যে মিরপুর-১১ এলাকার মেসার্স সাকিব ট্রেডিংয়ের  মালিক মো. হাসনাইন (৩৮), বনানীর মদিনা ফুডস শপের মালিক মো. আরিফুল ইসলাম (৪২), তেজগাঁও পূর্ব তেজতুরী বাজারের এলডুরাডু এন্টারপ্রাইজের তারিক আল দীন (৩৮), গাজীপুরের কামরুজ্জামান এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. কামরুজ্জামান (৩৫) এবং দক্ষিণখানের সোর্স ডিস্ট্রিবিউশনের মালিক গোলাম মোস্তফাকে  (৪৩) ৩ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়। এছাড়া উত্তরার রাজলক্ষ্মীর উত্তরা ফুডসের মালিক মো. জাবেরকে (৩০) ২ লক্ষ টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। পাশাপাশি ২১ হাজার ২শ ৬০ কেজি পরিমাণ ভেজাল, নষ্ট ও মেয়াদোত্তীর্ণ খেজুর জব্দের পর ধ্বংস করা হয়। 

মেয়াদোত্তীর্ণ খেজুর উদ্ধার/ ছবি- ঢাকা পোস্ট

ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে কোল্ড স্টোরেজে পণ্য রাখা প্রতিষ্ঠানের মালিকরা স্বীকার করেন যে, তারা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ধরনের ভেজাল, মেয়াদোত্তীর্ণ ও নষ্ট ভোগ্যপণ্য আমদানি করে তা খোলাবাজারে বিক্রি করে আসছিলেন।

মূলত রমজানকে টার্গেট করে তারা কম দামে ভেজাল, মেয়াদোত্তীর্ণ, নষ্ট ও মানহীন খেজুর বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করে কোল্ড স্টোরেজে মজুদ করে। অধিক মুনাফালোভী চক্রটি মানহীন খেজুর খুচরা বাজারে বাজারজাতকরণের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে। ফলে সাধারণ জনগণের স্বাস্থ্যঝুঁকি বৃদ্ধিসহ খাদ্যের সঠিক পুষ্টিমান নষ্ট হচ্ছে।

জেইউ/এইচকে