বাড্ডা সড়কে বসে আছেন বাইকচালকরা

দেশে চলছে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ কতটা কার্যকরী হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েই গেছে। সড়কের দিকে তাকালেই বিধিনিষেধের বর্তমান ‘রূপ’ চোখে পড়ে।

শপিংমল ও দোকানপাট খুলে দেওয়ায় বিধিনিষেধের নতুন দফায় চিরচেনা রূপে ফিরছে রাজধানী। সড়কে বিধিনিষেধের বালাই দেখা যাচ্ছে না। তাছাড়া, প্রথম দফার পর বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা স্তিমিত হতে থাকে। 

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে, রাস্তায় এখন গণপরিবহন ছাড়া অন্যসব যানবাহন স্বাভাবিক সময়ের মতোই কোনো ধরনের বাধা ছাড়াই চলছে। এদিকে শপিংমল ও দোকানপাট খোলা থাকায় রাস্তায় বেড়েছে মানুষের চলাফেরা। করোনার স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই। শুরুর দিকে মুভমেন্ট পাসের যথেষ্ট প্রয়োজন থাকলেও এখন আর তা নেই। কেননা মুভমেন্ট পাস আগের মতো চেক করা হচ্ছে না।

শনিবার (১ মে) রাজধানীর বাড্ডা, রামপুরা শান্তিনগর ও বাসাবো এলাকায় ঘুরে চিত্র দেখা গেছে, চেকপোস্টের কার্যক্রমও চলছে কাগজে-কলমে। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে চেকপোস্ট থাকলেও নেই পর্যাপ্ত সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য। ঢিলেঢালাভাবে চলছে চেকপোস্টের কার্যক্রম।

বাড্ডা এলাকায় একটি শপিংমলে কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতা মো. সুমন ঢাকা পোস্টকে বলেন, শপিংমল ও দোকানপাট সব কিছু খোলা রয়েছে। সব কিছু খোলা রেখে বিধিনিষেধ দিয়ে কোনো লাভ হবে না। আবার ঈদের আগে সব কিছু খোলা না থাকলেও অনেক সমস্যা। তবে আমরা যারা ঘর থেকে বের হচ্ছি, তাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা উচিত।

এদিকে, ফুটপাতে ভাসমান দোকানপাটে একদমই মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। অনেকে মুখে মাস্কও পরছেন না। শাহাজাদপুরের ভাসমান কাপড় বিক্রেতা আরিফ হোসেন বলেন, এখন ঈদের কেনা-বেচা। মানুষেরজনের ভিড় অনেক বেশি। আর সারাক্ষণ মুখে মাস্ক পরে কাস্টমারের সঙ্গে কথা বলা যায় না। তবে ভিড়ের মধ্যেও আমরা যতটুকু পারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছি।

অন্যদিকে শপিংমল মার্কেট খোলার পর রাস্তায় বেড়েছে চুক্তিভিত্তিক মোটরসাইকেল চালকদের সংখ্যা। যদিও বিধিনিষেধ শুরুর পর থেকে বন্ধ রয়েছে রাইড শেয়ারিং সেবা। রাজধানীর মোড়ে মোড়ে যাত্রীর জন্য রাইডারদের অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। 

রামপুরা ব্রিজের ওপর যাত্রীর জন্য অপেক্ষমাণ মোটরসাইকেল-চালক দিদ্দার হোসেন বলেন, সব কিছুই তো খোলা রয়েছে। আমরা ঘরে থেকে কেন না খেয়ে মরব? বাইক চালিয়ে আমাদের সংসার চলে। ঘরে বসে থাকলে তো টাকা ছাড়া সংসার চলবে না।

এদিকে, মেরুলবাড্ডা চেকপোস্টে দায়িত্বরত এক পুলিশ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা পোস্টকে বলেন, শপিংমল থেকে সব কিছুই খোলা রয়েছে। তাই রাস্তায় মানুষ ও গাড়ির সংখ্যা বেশি। তবে আমাদের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। যেসব গাড়ি বা যে মানুষদের সন্দেহ হচ্ছে, তাদের থামিয়ে ঘর থেকে বের হওয়ার নির্দিষ্ট কারণ জানতে চাচ্ছি আমরা। যারা যুক্তিযুক্ত উত্তর দিতে পারছেন না তাদের জরিমানা করছি।

এমএসি/আরএইচ