বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাত ক্রমবর্ধমানভাবে ডিকার্বনাইজেশনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এই পরিবর্তনের ফলে গ্যাস ও এলএনজির চাহিদা বাড়বে। ফলস্বরূপ, বিদ্যুৎ উৎপাদনের স্বল্প এবং নো-কার্বন উৎসের উপর ক্রমবর্ধমান জোর দেওয়া হবে এবং প্রাকৃতিক গ্যাসচালিত বিদ্যুৎ উৎপাদন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে।

বুধবার (৫ জুন) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ‘বাংলাদেশে বিদ্যুৎ খাতে ডিকার্বনাইজেশন পথ বিশ্লেষণ’ শীর্ষক আয়োজিত ওয়ার্কশপে এসব কথা বলেন বক্তারা।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (আইএফসি) এই ওয়ার্কশপের আয়োজন করে। এতে দ্য ল্যান্টাউ গ্রুপ(টিএলজি) এবং তার অংশীদার প্রকৌশলী সংসদ লিমিটেড (পিএসএল) কাজ করেছে।

বক্তারা বলেন, কপ-২৬ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৮.৫ গিগাওয়াটের ক্ষমতা সম্পন্ন ১০টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাতিল করার বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিলেন। এই কৌশলগত পদক্ষেপের লক্ষ্য গ্রিনহাউজ (জিএইচজি) নির্গমন হ্রাস করা এবং দীর্ঘমেয়াদে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বৃদ্ধি রোধ করা সম্ভব হবে৷

তারা বলেন, বাংলাদেশ তার বিদ্যুৎ পরিষেবার সাশ্রয়ী, নির্ভরযোগ্যতা এবং কার্বন দক্ষতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়নের জন্য সরকারের উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা থাকা সত্ত্বেও ২০৩০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য থেকে মোট উৎপাদনের ১৫ শতাংশ এবং ২০৪০ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশের অগ্রগতি যদিও ধীর। নবায়নযোগ্য শক্তির বিকাশ বৃহৎ আকারের সৌর পিভি প্রকল্পের জন্য জমির অভাব এবং বায়ু বা জলজ সম্পদের অভাব দ্বারা বাধাগ্রস্ত হয়।

বক্তারা আরও বলেন, বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমনে ৬.৭৩ শতাংশ নিঃশর্ত ভাবে হ্রাসের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে আর উন্নত দেশগুলো থেকে পর্যাপ্ত আর্থিক এবং অন্যান্য সহায়তা পাওয়ার শর্তে অতিরিক্ত ১৫.১২ শতাংশ কমানো সম্ভব হবে৷

আলোচনায় দ্য ল্যান্টাউ গ্রুপের (টিএলজি) পকঁস থেকে বলা হয়, নবায়নযোগ্য শক্তির সম্ভাব্যতা এবং বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে বিকল্প অথবা স্বল্প কার্বন শক্তির ভূমিকা সম্পর্কে বোঝার জন্য পাথওয়ে পরিস্থিতি তৈরি করবে। এই কার্যক্রম একদিকে বিদ্যুতের চাহিদা মেটানো এবং কার্বনডাইঅক্সাইড নির্গমন পরিচালনার ওপর জোর দেবে। বড় আকারের এবং বিতরণ করা সৌর, বায়ু (অফশোর বায়ু সহ), গ্যাস, পারমাণবিক বিদ্যুতের জন্য সম্ভাব্য এবং ব্যাটারি, স্টোরেজ এসব বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম চালানো হবে৷

ওয়ার্কশপে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মো. নুরুল আলম বলেন, আমি দীর্ঘদিন বিদ্যুৎ জ্বালানি খাতে কাজ করছি। প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় আমরা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে অগ্রগতি এনেছি। সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানির উপর জোর দিচ্ছে। সেই লক্ষ্য নিয়ে স্রেডা গঠন করা হয়েছিল। আমরা এই খাতে অনেক এগিয়েছি, ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী আরও অনেক দূর এগিয়ে যাব৷

ওয়ার্কশপে পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন, বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. মাহবুবুর রহমান, ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের (আইএফসি) সিনিয়র কান্ট্রি অফিসার কাজী ফারহান জহির, আইএফসির ইনফ্রাকটারচার এন্ড ন্যাচারাল রিসোর্সের প্রিন্সিপাল ইন্ডাস্ট্রি স্পেশালিস্ট অ্যালেন থনসেন্ড বক্তব্য রাখেন।

ওএফএ/এসকেডি