ব্যক্তিগত গাড়ি-মোটরসাইকেলে যানজট, গণপরিবহন নামলে কী হবে?
করোনাভাইরাস মহামারির বিস্তার ঠেকাতে সরকার ঘোষিত লকডাউন এখনও চলমান রয়েছে। কয়েক দফায় চলতে থাকা লকডাউন অনেক আগেই শিথিল অবস্থানে রূপ নিয়েছে। যে কারণে রাজধানীজুড়ে গণপরিবহনের অনুপস্থিতিতে সবই আগের নিয়মেই চলছে। তবে বিভিন্ন সড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশি চেক পোস্ট ব্যবস্থা চলমান থাকলেও দৃশ্যমান নেই লকডাউনের প্রথম দিকের কড়াকড়ি।
বুধবার (৫ মে) রাজধানীর ধানমন্ডি, শুক্রাবাদ, সাইন্সল্যাব, কলাবাগান, মিরপুর রোডসহ বেশ কয়েকটি সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, সড়কজুড়ে ব্যক্তিগত গাড়ির আধিক্য, সঙ্গে মোটরসাইকেলের পরিমাণও ছিল চোখে পড়ার মতো। এসব সড়কে থাকা চেক পোস্টগুলোতে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের চেকের বিষয়ে বেশ নমনীয় অবস্থানে দেখা গেছে। তবে মোটরসাইকেলের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে দুইজন নিয়ে চলাচলকারী চালকদের থামিয়ে বিভিন্ন ধরনের জিজ্ঞাসাসহ দেখা হচ্ছিল লাইসেন্সসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র।
বিজ্ঞাপন
সড়কে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সকাল নয়টা থেকে দুপুর পর্যন্ত গাড়ির আনাগোনা অনেক বেশি ছিল। এতে কিছু কিছু সড়কে খণ্ড খণ্ড জ্যামের সৃষ্টি হয়। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গাড়ির পরিমাণ কিছুটা কমতে থাকে।
ধানমন্ডি ৩২-এর চেক পোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ কনস্টেবল (ট্রাফিক) আলতাফ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘এই সড়কে অফিস টাইমে খুব চাপ ছিল। প্রাইভেটকার আর মোটরসাইকেলের পরিমাণ বেশি ছিল, এছাড়া অন্যান্য যানবহনও ছিল। সকালের দিকে চেকপোস্টে কড়াকড়ি ছিল, কিন্তু সমস্যা হচ্ছে; কড়াকড়ি দিতে গেলে গাড়ির যে চাপ পুরো রাস্তায় বড় জ্যাম হয়ে যায়। যার কারণে যতটা সম্ভব চেক করা হচ্ছে।’
বিজ্ঞাপন
কনস্টেবল আলতাফের সঙ্গে আলাপের মধ্যেই দেখা গেল চেক পোস্টে দায়িত্বরত কয়েকজন পুলিশ সদস্য বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল থামিয়ে দিয়েছেন। কথা বলে জানা যায়, দুজন বহন করায় তাদের থামিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এক মোটরসাইকেল চালক বলেন, গাবতলী থেকে মোটরসাইকেলে করে বোনকে নিয়ে গুলিস্তানে একটা কাজে যাচ্ছি, এখানে পুলিশ থামিয়ে জানতে চাইল সাথে কে? বলার পর লাইসেন্স চাইল, দেখালে ছেড়ে দেয়।
এসব সড়কে অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা ঈদের কেনাকাটা করতে নিউমার্কেটসহ আশপাশের বিভিন্ন শপিং মলগুলোতে যাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ জানান, অফিসের কাজে বের হয়েছেন।
এদিকে, আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে দেশের মূল শহরগুলোতে গণপরিবহন চলাচল শুরু করবে। বর্তমানে ব্যক্তিগত গাড়ি, মোটরসাইকেলসহ আরও কিছু যানবাহনের কারণে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে যানজটের খবর আসছে গণমাধ্যমগুলোতে। গণপরিবহন চালুর পর সড়কে যানজট আরও বাড়বে বলে আশংকা করছেন রাজধানীবাসী।
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় প্রথম দফায় ৫ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বিধিনিষেধ দেওয়া হয়। পরে সেটি ২ দিন বাড়ানো হয়। এ দফায় ভালো ফল না আসায় ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হয় এক সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধ। এটি বাড়িয়ে পরে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়। যদিও এ দফায় শপিংমল খোলাসহ বেশকিছু বিষয়ে বিধিনিষেধের শর্ত শিথিল করে সরকার। এরপর ২৮ এপ্রিল বিধিনিষেধের মেয়াদ ৫ মে পর্যন্ত বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। সবশেষ চলমান বিধিনিষেধ আরেক দফা বাড়িয়ে আজ বুধবার (৫ মে) প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। জারি করা প্রজ্ঞাপনে বিধিনিষেধ ৫ মে থেকে ১৬ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
এনআই/এইচকে