ঈদে দুস্থদের মুখে হাসি ফোটাতে লাখ টাকা করে পাচ্ছেন কাউন্সিলররা
আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে অসহায়দের মধ্যে বিতরণের জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) কাউন্সিলররা এক লাখ টাকা করে পাচ্ছেন। পাশাপাশি প্রতিটি সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলররা পাবেন ৫০ হাজার টাকা করে।
ডিএসসিসি সচিব আকরামুজ্জামানের সই করা এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানা গেছে। এতে বলা হয়েছে, পবিত্র ঈদুল ফিতরকে আনন্দময় করার জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৭৫টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা এক লাখ টাকা করে মোট ৭৫ লাখ টাকা পাচ্ছে। আর নারী কাউন্সিলররা ৫০ হাজার করে মোট ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ পাচ্ছেন।
বিজ্ঞাপন
সবমিলিয়ে এই বরাদ্দের পরিমাণ ৮৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এই অর্থ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বাজেটে বরাদ্দকৃত মেয়রের ঐচ্ছিক তহবিল খাত থেকে গত ৫ মে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
একটি পরিবারকে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত আর্থিক অনুদান দেওয়া হবে। আর্থিক অনুদানের জন্য বিবেচ্য ব্যক্তি-পরিবার প্রধানের জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন থাকতে হবে। চেক বিতরণের মাস্টাররোল আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধান সমাজকল্যাণ ও বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তার দফতরে পাঠাতে হবে। সেই সঙ্গে উপকারভোগীকে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ভোটার হতে হবে।
বিজ্ঞাপন
অন্যদিকে চলমান বিধিনিষেধে করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে এ পর্যন্ত ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন দৃশ্যমান তেমন কোনো উদ্যোগ নেয়নি। তবে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে সংস্থাটা দুটি। গত বছর দুই সিটি করপোরেশের দুস্থ-অসহায়দের মাঝে ত্রাণ সামগ্রীসহ এগিয়ে এসেছিল। কিন্তু এবার তেমনটা চোখে পড়ছে না।
যদিও সম্প্রতি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, করোনাকালে দুঃস্থ ও অসহায় মানুষদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণের জন্য ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলরের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে খাদ্যশস্যও বিতরণ করা হচ্ছে। আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ওয়ার্ডপ্রতি ৫০০ জন অসহায়-হতদরিদ্র মানুষকে শাড়ি ও লুঙ্গি বিতরণের জন্য কাউন্সিলরদের প্রত্যেককে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া ডিএনসিসি এলাকার ১ হাজার ৯০৭টি মসজিদের প্রত্যেক ইমামকে ২ হাজার টাকা ও প্রত্যেক মুয়াজ্জিনকে ১ হাজার টাকা করে মোট ৫৭ লাখ ২১ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। ৩৩৩ ও হটলাইনের মাধ্যমে খাদ্য সহায়তার জন্য ফোন করা অসহায় ও দুঃস্থ মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণের জন্য ১০ জন আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তার প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। খাদ্য সহায়তা বাবদ দুঃস্থ ও অসহায় মানুষের মাঝে বিতরণের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ পাওয়া ৭ লাখ টাকা ইতোমধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। শিশু খাদ্য ক্রয়পূর্বক বিতরণের জন্য একই মন্ত্রণালয় থেকে ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে।
অন্যদিকে গতবছর সরকারের পক্ষ থেকে বরাদ্দ পৌঁছার আগেই নিজেদের অর্থায়নে খাদ্য বিতরণ শুরু করেছিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। এর অংশ হিসেবে সেসময় ৬৬ দিনের সাধারণ ছুটিতে কয়েক লাখ নগরবাসীকে খাবার সরবরাহ করা হয়।
এ বিষয়ে সদ্য বিদায়ী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী সম্প্রতি বলেন, ডিএসসিসি এখনও সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো বরাদ্দ পাইনি। বরাদ্দ পেলে ডিএসসিসিও কাজ শুরু করবে। গত বছরের মতো এবারও সিটি করপোরেশন তার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় কিছু করবে কি না বা বিকল্প ব্যবস্থার সুযোগ আছে কি না তা নিয়ে মেয়রের সঙ্গে আলাপ করা হবে।
এএসএস/আরএইচ