প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যাবিষয়ক বি‌শেষ প্রতি‌নি‌ধি ড. খ‌লিলুর রহমান ব‌লে‌ছেন, আমরা প্রতিদিন সংঘবদ্ধ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অপপ্রচারের শিকার হচ্ছি। ফ্যাসিবাদ থেকে গণতন্ত্রে উত্তরণের এই ঐতিহাসিক সময়ে ভারতের কাছ থেকে অধিক দায়িত্বশীল ও প্রতিবেশীসুলভ সহযোগিতা পাওয়ার প্রত্যাশা করছি।

কাতারের দোহা ফোরামে ‘ক্রসরোডে বাংলাদেশ : শাসন ব্যবস্থা, গণতান্ত্রিক সংস্কার এবং শেখ হাসিনা পরবর্তী গতিপথ’ শীর্ষক সেশনে দেওয়া বক্ত‌ব্যে এসব কথা ব‌লেন তি‌নি। 

রোববার (৮ ডি‌সেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞ‌প্তি‌তে এ তথ্য জানি‌য়ে‌ছে।

খ‌লিলুর রহমান ব‌লেন, দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিবের আসন্ন বৈঠকে পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে সম্পর্ককে উন্নত পর্যায়ে নেওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। 

বাংলাদেশে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তনে বৈশ্বিক ঐকমত্য জরুরি বলে মন্তব্য ক‌রেন রোহিঙ্গা সমস্যাবিষয়ক বি‌শেষ প্রতি‌নি‌ধি। তি‌নি রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বলিষ্ঠ সহযোগিতা কামনা করেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, দোহা ফোরামের দ্বিতীয় দিনে এই সেশনের শুরুতে দোহা ফোরামে প্রধান উপদেষ্টাকে আমন্ত্রণের প্রেক্ষাপটে আয়োজক ও অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশ্যে পাঠানো ছয় মিনিটের একটি ভিডিও মেসেজ প্রচার করা হয়। 

খলিলুর রহমান বলেন, প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে শুধু মানবতার কারণে শত সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ গত সাত বছর ধরে আশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে। বিশ্ব সম্প্রদায়ের অধিকতর সহায়তা ছাড়া বাংলাদেশের পক্ষে এটি অব্যাহত রাখা খুবই কঠিন হয়ে পড়ছে। দ্রুততার সঙ্গে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে বৈশ্বিক ঐকমত্য গঠনে জোর দিচ্ছি। 

তি‌নি জানান, রোহিঙ্গা বিষয়ে আগামী বছর জাতিসংঘের একটি বিশেষ সম্মেলন হবে। আশা করছি, এ সম্মেলনের মাধ্যমে সব অংশীজনের সহায়তায় রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনে সহায়ক হবে। 

প্রধান উপদেষ্টার বি‌শেষ প্রতি‌নি‌ধি বাংলাদেশে জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার জুলাই-আগস্ট বৈপ্লবিক গণ-অভ্যুত্থানের ফলে বাংলাদেশের সামনে এ প্রতারণা থেকে মুক্তি এবং গণতন্ত্র ও সাম্যের ভিত্তিতে দেশ গড়ার অপার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। রাষ্ট্র ব্যবস্থার সংস্কারের মাধ্যমে সেই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। 

সেশনে লন্ডনভিত্তিক জাগরণ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শরীফ বান্নার সঞ্চালনায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সহসমন্বয়ক সাজিদ মাহমুদ, সোয়াস ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের অধ্যাপক নাওমি হোসেন, বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সিনথিয়া ফরিদ, ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড গভর্নেন্সের চেয়ারম্যান সৈয়দ মুনির খসরু প্রমুখ প্যানেল বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

এনআই/এসএম