শর্তসাপেক্ষে আজ সড়কে নামছে দূরপাল্লার গণপরিবহন
সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে দেড় মাসেরও বেশি সময় দূরপাল্লার গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়। অবশেষে সরকার আজ সোমবার (২৪ মে) থেকে দূরপাল্লার গণপরিবহন চালুর অনুমতি দিয়েছে। তবে এক্ষেত্রে সরকারের বেঁধে দেওয়া শর্ত মানতে হবে পরিবহন শ্রমিক ও মালিকদের।
রোববার (২৩ মে) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব রেজাউল ইসলামের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে চলমান বিধিনিষেধ আগামী ৩০ মে পর্যন্ত আরেক দফা বাড়ানো হয়েছে। তবে এই বিধিনিষেধের মধ্যে আন্তঃজেলাসহ সব ধরনের গণপরিবহন অর্ধেক আসন খালি রাখার শর্তে চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, আন্তঃজেলাসহ সব ধরনের গণপরিবহন আসন সংখ্যার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে পারবে। তবে অবশ্যই যাত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে মাস্ক পরিধান এবং সবধরনের স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।
সরকারের এমন সিদ্ধান্তের পরপরই বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাংগঠনিক চিঠিতে সব জেলার বাস মালিকদের সোমবার থেকে দূরপাল্লার গণপরিবহন চালু করার বিষয়টি জানানো হয়।
বিজ্ঞাপন
সংগঠনটি তাদের চিঠিতে জানায়, সরকার নির্ধারিত শর্তে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস চালাতে হবে। মাস্ক ছাড়া কোনো যাত্রী ওঠানো যাবে না। চালক, কন্ডাক্টর, হেলপার, টিকিট বিক্রিতে নিয়োজিত ব্যক্তিকে মাস্ক পরতে হবে। টিকিট কাউন্টারে সামাজিক দূরত্ব মানতে হবে।
চলতি বছরের মার্চে করোনা সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ার পর গণপরিবহনে অর্ধেক আসন খালি রাখার নির্দেশ দেয় সরকার। এ কারণে গত ৩০ মার্চ বাসের ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়ায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। এ ভাড়া কার্যকরের পরপরই দূরপাল্লার বাস বন্ধ করে দেয় সরকার। দেড় মাসের বিধিনিষেধে কয়েক দফায় চালু হওয়া নগর পরিবহনে ৬০ শতাংশ বর্ধিত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। সে অনুযায়ী দূরপাল্লার গণপরিবহনও ৬০ শতাংশ হারে ভাড়া বেশি নেবে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সহ-সম্পাদক ও ঢাকা জেলা যানবাহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. আব্বাস উদ্দীন ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রথমে সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। কারণ এতদিন আন্তঃজেলা বাস সার্ভিস চালু থাকলেও দূরপাল্লার গণপরিবহন বন্ধ ছিল। যার ফলে আমরা নানা সমস্যার মধ্যে ছিলাম। এখন সরকার দূরপাল্লার গণরিবহন চালুর অনুমতি দেওয়ায় আমরা খুশি।
তিনি বলেন, দেশের স্বার্থেই এতদিন দূরপাল্লার পরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছিল। কিন্তু যেসব শ্রমিকরা পরিবহনের সঙ্গে জড়িত, তাদের কথা চিন্তা করে এবং আমাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পরিবহন চালু করায় অনেক পরিবার না খেয়ে থাকার কষ্ট থেকে রক্ষা পেল। সোমবার থেকে সরকারের বেঁধে দেওয়া শর্ত অনুযায়ীই গণপরিবহন চালু করা হবে। যদি কেউ সরকারের বিধিনিষেধ না মানে, তাহলে প্রশাসন ব্যবস্থা নিলে আমরা সমর্থন করব।
তিনি আরও বলেন, পরিবহন শ্রমিক নেতারা, পরিবহন মালিক ও বিআরটিএর কর্মকর্তারা স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টি দেখভাল করবেন। আমরা চাই সরকার আমাদের কথা যেভাবে রেখেছে, ঠিক সেভাবেই আমরা সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনেই বাস চালাব। বাসে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাস্ক থাকবে। কোন যাত্রীকে মাস্ক ছাড়া বাসে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় প্রথমে গত এপ্রিল মাসের ৫ তারিখ থেকে ১১ তারিখ পর্যন্ত বিধিনিষেধ আরোপ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। প্রথম ধাপ শেষ হলে বিধিনিষেধের মেয়াদ বাড়িয়ে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়। এরপর আরও কয়েক দফায় মেয়াদ বেড়েছে। সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী বিধিনিষেধ আগামী ৩০ মে পর্যন্ত বহাল থাকবে।
এসআর/আরএইচ