জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্টে সংবাদ প্রকাশের পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নানা অনিয়মের অভিযোগে এক ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকা হাসপাতালের সেই উপ-পরিচালক (ডিডি) (চলতি দায়িত্ব) (প্রশাসন) ডা. আশরাফুল আলম তিন দিনের ছুটি নিয়েছেন।

রোববার (১৯ জানুয়ারি) সকালে ঢামেক হাসপাতালে এসে তিন দিনের ছুটির আবেদন করে চলে যান তিনি।

বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানকে কয়েকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

তবে হাসপাতালের প্রশাসনিক ব্লকের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তারা বলেন, গতকাল (শনিবার) ঢাকা পোস্টে সংবাদ প্রকাশের পর আজ সকালে তিনি রিসিভ শাখায় ছুটির একটি দরখাস্ত দিয়ে পরিচালককে মৌখিকভাবে বলে চলে যান। তবে দরখাস্তে তিনি কী কারণ দেখিয়ে ছুটি নিয়েছেন সেটি জানাতে পারেননি তারা।

ওই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলেন, তিনি সাধারণত এভাবে ছুটি নেন না। গতকাল ঢাকা মেডিকেলের ড‍্যাব ও সাবেক ছাত্রদল নেতারা নানা অনিয়মের অভিযোগে তাকে এক ঘণ্টা পরিচালকের রুমে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এরপর থেকে দেখেছি তার মন-মেজাজ অনেক খারাপ।

প্রসঙ্গত, শনিবার (১৮ জানুয়ারি) ‘ঢাকা মেডিকেলে এক ঘণ্টা অবরুদ্ধ ছিলেন ডিডি আশরাফ’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করে ঢাকা পোস্ট। এদিন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আসাদুজ্জামানের রুমে তাকে এক ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রেখেছিলেন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড‍্যাব) ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাবেক নেতাকর্মীরা।

এসময় উপ-পরিচালক আশরাফুল আলমের বিরুদ্ধে ড‍্যাব ও সাবেক ছাত্রদল নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন– তিনি মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে হাসপাতালে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে লোক নিয়োগ করেছেন, ঠিকাদারের কাছ থেকে টাকা নিয়ে সুইজারল্যান্ডে ‘আমোদ-ফুর্তি’ করেছেন, ঠিকাদারের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তাদের কাজ পাইয়ে দিয়েছেন।

আশরাফুল আলমের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ করা হয়, তিনি আওয়ামী লীগের আমলে সাবেক ছাত্রলীগের ঢাকা মেডিকেল কলেজ শাখার সহ সভাপতি পরিচয় দিতেন এবং বর্তমানে নিজের চেয়ার ঠিক রাখতে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি পরিচয় দিচ্ছেন। ছাত্রদলের সাবেক নেতাকর্মীরা বলছেন, আশরাফুল আলম কখনোই ছাত্রদলের কোনো পদে ছিলেন না, বরং তিনি ছাত্রলীগের কমিটিতে ছিলেন। তিনি ছিলেন গত ফ‍্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের দোসর।

তারা আরও বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন অভিযোগে দুইজন ওয়ার্ড মাস্টারকে ধরা হলেও এই উপ-পরিচালক আশরাফের অনুসারী হওয়ায় তাদের আবার চাকরিতে বহাল করা হয়। ঢামেক হাসপাতালে ওয়ার্ড মাস্টার নিয়োগ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর সহকারী পরিচালক (অর্থ ও স্টোর) থেকে তিনি উপ-পরিচালকের চলতি দায়িত্ব পদ বাগিয়ে নেন। তিনি ঢাকা মেডিকেলের অঘোষিত পরিচালক। কিন্তু এভাবে আর চলতে দেওয়া যাবে না।

এসএএ/এসএসএইচ