‘কৃষিপণ্য ওএমএস’ বিক্রি শেষে মিললো ভূতাপেক্ষা অনুমোদন
বাজারে সবজির উচ্চমূল্যের পরিপ্রেক্ষিতে নিম্নবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত আয়ের সাধারণ মানুষের স্বল্পমূল্যে কৃষি পণ্য বিক্রি কার্যক্রম চলায় সরকার। ঢাকা মহানগরী, চট্টগ্রাম, খুলনা মহানগরীসহ সারা দেশে ৫০টি পয়েন্টে ভ্রাম্যমাণ ট্রাক সেলের মাধ্যমে এ বিক্রির কার্যক্রম পরিচালিত হয়। কর্মসূচির আওতায় ৮ লাখের বেশি পরিবার ভর্তুকি মূল্যে কৃষিপণ্য পেয়েছেন। ইতোমধ্যে এই কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। কার্যক্রম বন্ধের পর এই কর্মসূচির ভূতাপেক্ষা অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়।
বিজ্ঞাপন
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে ‘কৃষিপণ্য ওএমএস কর্মসূচি-২০২৪’-এর আওতায় সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে কৃষি পণ্য ও সংশ্লিষ্ট সেবা ক্রয় কার্যের ভূতাপেক্ষা অনুমোদন চাওয়া হলে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি তা অনুমোদন দিয়েছে।
আরও পড়ুন
বিজ্ঞাপন
জানা গেছে, গত বছরের ১৫ অক্টোবর অর্থ উপদেষ্টা, কৃষি উপদেষ্টা, কৃষি সচিব, বাণিজ্য সচিব এবং অন্যান্য উচ্চ পর্যায়ের অংশীজনের উপস্থিতিতে কৃষি অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়িত ‘কৃষিপণ্য ওএমএস কর্মসূচি-২০২৪’ উদ্বোধন করা হয়। কর্মসূচির আওতায় নিম্নবিত্ত এবং নিম্ন মধ্যবিত্ত আয়ের সাধারণ মানুষের মাঝে স্বল্পমূল্যে কৃষি পণ্য ঢাকা মহানগরী, চট্টগ্রাম, খুলনা মহানগরীসহ সারাদেশে ৫০টি পয়েন্টে ভ্রাম্যমাণ ট্রাক সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
সরকারি নির্দেশনা পাওয়ার একদিনের মধ্যে জরুরি পরিস্থিতি বিবেচনায় কৃষিপণ্য ওএমএস কর্মসূচি পরিচালনার নির্দেশনা থাকায় তাৎক্ষণিক পিপিএ-২০০৬ অনুসরণ করে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির অনুমোদন গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। এ কারণে ‘কৃষিপণ্য ওএমএস কর্মসূচি-২০২৪’ এর আওতায় ভর্তুকি মূল্যে কৃষি পণ্য বিক্রয়ের নিমিত্ত পিপিআর-২০০৮ এর ৭৬ (১)(ঘ), ও ৭৬ (১)(ট) অনুচ্ছেদ অনুসারে কৃষিপণ্য ও আনুষঙ্গিক সেবা ক্রয়ে ভূতাপেক্ষভাবে অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব উপস্থাপন করা হলে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি অনুমোদন দিয়েছে।
কর্মসূচির আওতায় ২০২৪ সালের ১৫ অক্টোবর থেকে ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৮ লাখ ১৭ হাজার ৫২৯টি উপকারভোগী পরিবারের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে কৃষিপণ্য পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে। এই কার্যক্রম ঢাকার মেসার্স বাকু ইন্টারন্যাশনাল, মেসার্স আম্মা এন্টারপ্রাইজ এবং মেসার্স এলবি ট্রান্সপোর্টের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়।
এদিকে বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, কৃষিপণ্যের বিশেষ ওএমএস এর বিষয়টা আপনারা জানেন আমরা খুব ইমারজেন্সি বেসিসে করেছিলাম। ওটার জন্য স্পেশাল টাকাও দেওয়া হয়েছে। ওটা সাকসেসফুলি ইমপ্লিমেন্ট করা গেছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং নারায়ণগঞ্জে প্রায় ৮ লাখের বেশি লোক ওটার কভারেজ পেয়েছে। আপাতত ডিসেম্বরে এটা আমরা স্থগিত করলাম। কারণ বাজার মোটামুটি... এসেছে। আর ভবিষ্যতে যদি আবার ইমারজেন্সি হয় তখন দেখা যাবে।
মানুষ এমনিতেই মূল্যস্ফীতির চাপে রয়েছে, এ পরিস্থিতিতে বিশেষ ওএমএস বন্ধ করা হলো। আপনাদের বিকল্প কোনো পরিকল্পনা আছে কি? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আপাতত এটা নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা নেই। আমরা দেখি। যদি অব্যাহতভাবে চলে, তখন হয় তো অল্টারনেটিভ আমরা আবার শুরু করতে পারি।
তিনি বলেন, এখনো সাপ্লাই চেন ব্রোকারের হাতে। চাল মোকামে থাকে, মোকাম থেকে আনে না। ওগুলো তো ঠিক সাপ্লাইর স্বল্পতা না। সাপ্লাই স্বল্পতা, এটা সাপ্লাই চেন যারা মেনুপুলেট করছে খুচরা-পাইকারি বিক্রেতারা, সেটা একটা কিছু ইস্যু। চালের দাম তো কিছুদিন আগে কিছুটা কমেছে। অন্যগুলো মোটামুটি সহনীয় আছে।
কোন ইস্যুতে বিশেষ ওএমএস বন্ধ করছেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ওটা দিয়ে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। এগুলোতে এতো ভর্তুকি দেওয়া হয়, ভালো লোকও লাইনে দাঁড়ায়।
এমএম/এআইএস