৪৭ নতুন বইয়ে জমেছে বইমেলার চতুর্থ দিন
বাঙালির প্রাণের উৎসব বইমেলার চতুর্থ দিন আজ। এ দিন প্রকাশিত হয়েছে নতুন ৪৭টি বই। আর সবমিলিয়ে বইমেলার প্রথম চার দিনে নতুন বইয়ের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৭টিতে।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে বাংলা একাডেমির জনসংযোগ বিভাগ থেকে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
সংশ্লিষ্টরা জানান, অমর একুশে বইমেলা ৪র্থ দিনে মেলা শুরু হয়েছে বিকেল ৩টায়। পরে বইমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘কুমুদিনী হাজং : জুইলী তারা, তারালা জুই’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পাভেল পার্থ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন মতিলাল হাজং এবং পরাগ রিছিল। সভাপতিত্ব করেন আবু সাঈদ খান।
আরও পড়ুন
বিজ্ঞাপন
অনুষ্ঠানে প্রাবন্ধিক বলেন, ঔপনিবেশিক জুলুম বিরোধী কৃষক আন্দোলনের এক সংগ্রামী নেত্রী কুমুদিনী হাজং। তিনি ঔপনিবেশিক শাসন, বৈষম্য, সার্বভৌমত্ব, আত্মপরিচয়, ন্যায্য মজুরি, কৃষি, ভূমি, অরণ্য কিংবা সমাজ রূপান্তরের প্রশ্নগুলো জারি রেখে লড়াই চালিয়ে গেছেন। পরিবেশ-গণহত্যা ও কর্তৃত্ববাদী ইতিহাসের সাক্ষী তিনি। ব্রিটিশ আমলে অন্যায় টংক প্রথার বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা টংক আন্দোলনে বহু হাজং নারী-পুরুষ শহিদ হন। তবে এই আন্দোলনের সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত নাম কুমুদিনী হাজং। চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত থেকে শুরু করে ব্রিটিশ জুলুম, জাতিরাষ্ট্রিক জাত্যভিমানের রক্ত দাগের ভেতর দিয়ে তাই কুমুদিনীকে পাঠ করা জরুরি।
আলোচকরা বলেন, টংক আন্দোলনে কুমুদিনী হাজং-এর মতো আরো নাম না জানা অনেক নারীর প্রবল অংশগ্রহণ ছিল। তারা গ্রামে গ্রামে গিয়ে কৃষক সমিতি গঠন করেছেন, নারী-পুরুষদের উদ্বুদ্ধ করেছেন। খুব অল্প বয়স থেকেই অধিকার আদায়ের জন্য বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন কুমুদিনী হাজং। সমৃদ্ধ কৃষি জীবনের স্বপ্ন নিয়ে কৃষি ব্যবস্থা ও কৃষক সমাজের সব কর্তৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত করার জন্য জীবন বাজি রেখে টংক আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। তাঁর সংগ্রামী জীবন, কর্ম ও অবদান নিয়ে নানামুখী গবেষণা হওয়া প্রয়োজন।
আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে আবু সাঈদ খান বলেন, রাজনৈতিক ধারার বাইরেও নানা জন বিদ্রোহ, জন-আন্দোলন আমাদের জাতীয় মুক্তিসংগ্রামকে সমৃদ্ধ ও বেগবান করেছিলেন। টংক আন্দোলনও ছিল সেরকমই একটি আন্দোলন যার অন্যতম সংগ্রামী নেত্রী ছিলেন কুমুদিনী হাজং। একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গড়ে তুলতে হলে আমাদের এ দেশের সব ধর্ম, বর্ণ ও জাতিসত্তার সংগ্রামের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ভাষা সামগ্রিকভাবে ধারণ করতে হবে।
অন্যদিকে, লেখক বলছি মঞ্চে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন- কবি আতাহার খান, কথাসাহিত্যিক পাপড়ি রহমান। আর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন— কবি আবদুল হাই শিকদার, কবি সোহেল হাসান গালিব। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী ইশরাত শিউলি এবং কাজী বুশরা আহমেদ তিথি। আজ ছিল তাহমিনা সারোয়ার পরিচালিত সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘উপান্তিক থিয়েটার’ এর পরিবেশনা। একে সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী স্বর্ণময়ী মণ্ডল, অনুপম হালদার, নুরিতা নুসরাত খন্দকার, দিদারুল করিম এবং অমৃত চন্দ্র বণিক।
আগামীকাল যা থাকছে বইমেলায়
আগামীকাল বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টায় বইমেলা শুরু হবে। চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। এছাড়া বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘হোসেনউদ্দীন হোসেন’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন আহমেদ মাওলা। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন শহীদ ইকবাল এবং আবুল ফজল। সভাপতিত্ব করবেন মঈনুল আহসান সাবের।
আরএইচটি/এআইএস