চট্টগ্রামে ফুটপাতে জমজমাট ইফতার বাজার
প্রতিবছরের মতো এবারও রমজান ঘিরে উৎসবের আমেজ বইছে চট্টগ্রাম নগরে। বিভিন্ন হোটেল রেস্তোরাঁর বাইরে সামিয়ানা টানিয়ে ইফতারের বাহারি পদ নিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। রঙিন ঝাড়-বাতি দিয়ে সাজানো হয়েছে চারপাশ। অনেকে ফুটপাতেই সাজিয়েছে ইফতারির পসরা। বিকেল গড়াতেই বিক্রেতাদের নানা হাঁকডাকে সৃষ্টি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ। ইফতারের সময় ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে এসব হোটেল-রেস্তোরাঁর বাইরে ভিড় বাড়তে থাকে ক্রেতাদের। আবার বিভিন্ন প্রয়োজনে বের হওয়া ঘরমুখো মানুষও উঁকি দেন নানা হোটেল রেস্তোরাঁয়। পছন্দের ইফতারি নিয়ে বাসায় ফেরেন পরিবারের কাছে।
এবার আটা, ময়দা, চিনি, তেলসহ আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমেছে নানা পণ্যের। গেল কয়েক বছরের তুলনায় দেশের বাজারেও নিম্নমুখী ছোলা, চিনি, পেঁয়াজসহ রমজানে চাহিদা বাড়ে এমন পণ্যের দাম। তবে রমজানে পণ্যের দাম নিম্নমুখী হলেও তার প্রভাব পড়েনি ইফতারের বাজারে। গেল বছরের মতো ফুটপাত থেকে অভিজাত রেস্তোরাঁ সর্বত্র বেশ চড়া দাম রয়ে গেছে। অভিজাত রেস্তোরাঁগুলোতে নানা মুখরোচক খাবার তৈরি হলেও ইফতারসামগ্রী হিসেবে সাধারণ মানুষের কাছে জনপ্রিয় ছোলা, পিঁয়াজু, বেগুনি, আলুর চপ ও জিলাপিসহ তুলনামূলক কম দামি পণ্যগুলো।
বিজ্ঞাপন
নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ইফতারের বাজার ঘুরে দেখা যায়, পিঁয়াজু, বেগুনি, আলুর চপ ও জিলাপি বিক্রি হচ্ছে পণ্যভেদে প্রতিপিস ৫ থেকে ১৫ টাকা দামে। এক বছর আগেও এসব সামগ্রীর দাম একই ছিল প্রায়। তাছাড়া এবার ইফতারির বাজারে প্রতিকেজি রান্না করা ছোলা বিক্রি হচ্ছে ২০০-৩০০, চিকেন স্টিক ১২০, ফ্রাইড প্রন ৬০, স্প্রিং রোল ২৫, শামি কাবাব ৫০, চিকেন শাসলিক ১২০, চিকেন ড্রামস্টিক ৭০, বিফ কাটলেট ১২০, চিকেন ললিপপ ৬০, মোমো ফ্রাই ৪৫, চিকেন ফ্রাই ৬০, চিকেন স্টিক ১২০, চিকেন রোল ৩০, চিকেন ব্রোস্ট ১২০, চিকেন বটি কাবাব ২৬০, চিকেন অনথন প্রতিপিস ৪০-৫০, তন্দুরি চিকেন ১৫০, গ্রিলড চিকেন ১৪০, চিকেন নাগেট ৯০-১০০, চিকেন বল ৩০-৫০, বিফ ও মাটন হালিম ৮০০ টাকা কেজি, চিকেন হালিম ৭৫০-৭৮০, বিফ মেজবানি কেজি ১২শ-১৩শ, গোটা মুরগি রোস্ট ৪৮০ এবং বিফ চপ কেজি এক হাজার ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এর বাইরে লাচ্ছি প্রতি লিটার ৪০০-৬০০, দইবড়া পিস ১০০, ফিরনি কেজি ৩৮০ এবং জিলাপি কেজি ৩০০-৪২০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
আরও পড়ুন
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরীর বহদ্দারহাটে কাশবন রেস্তোরাঁয় হালিম কিনতে এসেছিলেন চান্দগাঁও এলাকার বাসিন্দা হাবিবুল আহসান। তিনি বলেন, প্রতিবছর এখান থেকে হালিম কিনি। তাই আজ প্রথম ইফতার হিসেবে হালিম কিনতে এসেছি, অনেক দাম।
নগরীর চকবাজারে ফুটপাতে ইফতার সামগ্রী বিক্রি করা সাইফুল আলম বলেন, ছোলা, পিঁয়াজু, আলুর চপ আর বেগুনিতে গ্রাহকের চাহিদা বেশি। আমরা জিলাপিও বিক্রি করছি। আসরের পর থেকে বিক্রি শুরু হয়। দিনে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকার মতো বিক্রি হয়।
এদিকে পরিবর্তন নেই রান্না করা মাংসের দামেও। নগরে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৯০-২১০, গরুর মাংস ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা এবং ছাগলের মাংস ৯৫০-১১শ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
আরও পড়ুন
বিভিন্ন ভোগ্যপণ্যের নিম্নমুখী দামের মধ্যে ইফতার পণ্যের চড়া দামের বিষয়ে নগরীর ২ নম্বর গেট এলাকার রাজবাড়ী রেস্তোরাঁর স্বত্বাধিকারী শরীফ চৌধুরী বলেন, ইফতারের দাম কমেনি এটা সত্য না। ভোগ্যপণ্যের বাজার নিম্নমুখী থাকবে আশা করে আমরা কিছু কিছু ইফতার সামগ্রীর দাম কমিয়েছি। কিন্তু এখন সমস্যায় পড়েছি। তেলের তেলেসমাতি চলছে, তেলের দাম আমাদের ভোগাচ্ছে। তা ছাড়া মসলার দামও বাড়তি, এটার কারণেও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে আমাদের।
আরএমএন/এমজে