মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার সব বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির জন্য উন্মুক্ত করতে স্মারকলিপি দিয়েছে জনশক্তি রফতানিকারকদের একাংশ।

সোমবার (২১ এপ্রিল) প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভুঁইয়ার কাছে স্মারকলিপি দেন তারা।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, সাবেক স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রত্যক্ষ মদতে বায়রার সাবেক মহাসচিব রুহুল আমিন স্বপন ও মালয়েশিয়ার বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত দাতুশ্রী আমিনের নেতৃত্বে সালমান এফ রহমান, শেখ রেহানা, সাবেক এমপি আলাউদ্দিন চৌধুরী নাসিম, সাবেক অর্থমন্ত্রী লোটাস কামাল ও তার পরিবার, সাবেক মন্ত্রী ইমরান আহমেদ, সাবেক সিনিয়র সচিব ড. মনিরুছ সালেহীন, সাবেক এমপি বেনজির আহমেদ, সাবেক এমপি লেফটেনেন্ট জেনারেল মাসুদ, সাবেক এমপি নিজাম হাজারী, বায়রার সাবেক সভাপতি আবুল বাসার, বায়রার সাবেক মহাসচিব আলি হায়দার চৌধুরীসহ সাবেক সরকারের প্রভাবশালী নেতাদের যোগসাজশে মালয়েশিয়ার শ্রম বাজারে চরম অরাজকতা, অনিয়ম, দুর্নীতির মাধ্যমে সিন্ডিকেট করে শত শত কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন।

বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়াগামী প্রত্যেক কর্মীকে বাধ্যতামূলকভাবে সব খরচের অতিরিক্ত ১ লাখ ৫২ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয়েছে। ফলে প্রত্যেক কর্মীকে ৪-৫ লাখ টাকা দিয়ে মালয়েশিয়া যেতে হয়েছে। ওই চাঁদার মধ্যে ৫০০০ রিঙ্গিত ছিল মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর অনলাইন পদ্ধতি এফডব্লিউসিএমএস’র। যার ফি গ্রহণ করতেন সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা রুহুল আমিন স্বপন।

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, মালয়েশিয়া শ্রমবাজারের অনিয়ম, দুর্নীতি ও টাকা পাচার নিয়ে দুদক ও সিআইডিতে মামলা চলমান। কিন্তু ৫ আগস্টের পর থেকে পলাতক থাকা সেই রুহুল আমিন স্বপন ও তার সহযোগীরা, তাদের মালয়েশিয়ান পার্টনার দাতোশ্রী আমিন আবারও সিন্ডিকেট গড়তে সক্রিয় হয়ে উঠেছে।

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মালয়েশিয়ান নাগরিক দাতোশ্রী আমিনের মালয়েশিয়ান আইটি কোম্পানি বেসটিনেটের মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছে ১২ হাজার ৩০০ কোটি ৪ লাখ টাকা। এ সিন্ডিকেটের দরুন চূড়ান্তভাবে বহির্গমন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পরও ১৭ হাজার কর্মীসহ মোট ৫০ হাজার কর্মী মালয়েশিয়া যেতে পারেনি।

প্রবাসী কল‌্যাণ স‌চি‌বের কা‌ছে স্মারক‌লি‌পি দেওয়ার সময়বায়রার সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট রিয়াজুল ইসলাম, নোমান চৌধুরী, সিনিয়র সদস্য খন্দকার আবু আশফাক ও সাবেক যুগ্ম মহাসচিব ফখরুল ইসলাম।

ফখরুল ইসলাম বলেন, এ সিন্ডিকেট নির্মূলে আসন্ন জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে আগের সমঝোতা স্মারকের দুটো ধারা বাদ দিতে হবে। যাতে অন্যান্য সোর্সিং দেশের ন্যায় মালয়েশিয়ান সরকারের পরিবর্তে মালয়েশিয়ান নিয়োগকর্তা বাংলাদেশের রিক্রুটিং এজেন্সি পছন্দ করবে। কেননা, মালয়েশিয়ান শ্রমবাজার কোনও বিশেষ ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর জন্য নয়। বরং সব বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির জন্য উন্মুক্ত করতে হবে এবং কম খরচে কর্মী প্রেরণ নিশ্চিত করতে হবে।

তি‌নি ব‌লেন, বিতর্কিত ও দুর্নীতিগ্রস্ত এফডব্লিউসিএমএস অনলাইন পদ্ধতি বাতিল করতে হবে। সিন্ডিকেটের মূল হোতাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

এনআই/এআইএস