অর্থ পাচারকারী শয়তানের মতো, ধরা কঠিন : দুদক কমিশনার
অর্থ পাচারকারী শয়তানের মতো, তাদের ধরা কঠিন বলে মনে করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনার মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
বিজ্ঞাপন
দুদক কমিশনার বলেন, পাচারকারীরা শয়তানের মতো। শয়তান শিরা উপশিরায় যায়, তাকে দেখা যায় না। শয়তানের কর্মকাণ্ডের জন্য মানুষ দুর্ভোগ ভোগ করে। পাচারকারীদের জন্য আমরা দুর্ভোগ ভোগ করছি। পাচারকারীকে যদি কোনোভাবে ধরতে পারি, তাকে ছাড়ব না।
পাচারকারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যারা দুর্নীতিগ্রস্ত। অর্থ পাচারকারী অবৈধভাবে নেওয়া টাকা হুন্ডি করে বাইরে পাঠিয়ে দেয়। আর রেমিট্যান্সের মাধ্যমে দেশে আনে। পরে তিনি রেমিট্যান্স যোদ্ধা হয়ে যান। এটার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা আছে, তা কেতাবে লেখা নেই।
বিজ্ঞাপন
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান সম্পর্কে জানতে চাইলে কমিশনার বলেন, যেগুলো অনুসন্ধান চলছে, সেগুলো আমার কাছে আজ পর্যন্ত আসেনি। যেগুলো চার্জশিট হয়েছে, সেগুলোর চার্জশিট অনেক আগে হয়ে গেছে।
দুদকের পক্ষ থেকে টিউলিপ সিদ্দিকীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে আজিজী বলেন, কেন যোগাযোগ করা হবে, আমরা তার সঙ্গে যোগাযোগ কীভাবে করবো, তার নির্ধারিত ঠিকানায় নোটিশ পাঠানো হয়েছে। তার তো ঠিকানা আছে। ইতোমধ্যে সেখানে নোটিশ গেছে। কেউ রিসিভ করেছে কিনা, এটা জানি না। দুদক বিচার প্রক্রিয়া আদালতে দিয়ে দেবে। আদালত বিচার করবে।
অর্থপাচার রোধে দুদকের টাস্কফোর্স কী করছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিবিড়ভাবে যোগাযোগ চলছে। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দুদক চেয়ারম্যান নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। দুদকের একার পক্ষে অর্থ ফেরত আনা সম্ভব নয়, আন্তর্জাতিক অনেক সংস্থা এর সঙ্গে যুক্ত। বিভিন্ন এজেন্সির সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করছি।
আরও পড়ুন
তিনি বলেন, পুরো রাষ্ট্র আজ অন্যায়ের বিরুদ্ধে, দুর্নীতির বিরুদ্ধেও জিরো টলারেন্সে আছে। রাষ্ট্রের একটি সংস্থা হিসেবে আমরা উল্টো দিকে হাঁটবো না, স্রোতের বিপরীতে যাব না। আমরা রাষ্ট্রকে সহায়তা দিচ্ছি, এটি অব্যাহত থাকবে।
দুদকের কর্মকাণ্ড প্রসঙ্গে কমিশনার বলেন, অনেক মামলা আদালতে চলে গেছে, তাই এ নিয়ে মন্তব্য করতে পারবো না। আর পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনতে যত ধরনের আইনি প্রক্রিয়া আছে, সবগুলোই আমরা গ্রহণ করব। এ ব্যাপারে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
দুদক কতটা কঠোর থাকবে—এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন পূর্ববর্তী সরকারের মামলা, ওয়ান ইলেভেনের মামলায় যারা বিচারাধীন, তাদের একটি মামলাও উঠবে না। ট্রায়াল চলছে। আদালত যদি মনে করেন তাদের বিরুদ্ধে চার্জ প্রমাণিত হয়নি, সেটা সম্পূর্ণ আদালতের এখতিয়ার।
আদালতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আদালতে স্বাধীনতা আছে। আদালত বিচার করবেন, রায় দেবেন। সেই রায়ে যারা সংক্ষুব্ধ হবেন, তারা আপিল করবেন।
দুদক কর্মকর্তাদের দুর্নীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের কর্মকর্তাদের দুর্নীতির কোনো গন্ধ যদি পাই, তাহলে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা কাউকে ছাড় দিচ্ছি না। আগে আমরা ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশনে যাচ্ছি, নিশ্চিতভাবে তাদেরও বিচারের আওতায় আনা হবে। দুদকের ক্যামেরা, আমি-আমরা যতদূর সম্ভব বিস্তার করেছি, আপনারা দেখুন। কর্মকর্তাদের আমরা রিসাফল করছি, মফস্বলে যারা চৌকস কর্মকর্তা আছেন, তাদের হেডকোয়ার্টারে আনছি। হেডকোয়ার্টারে যারা ঝিমুচ্ছেন, তাদের মফস্বলে পাঠাচ্ছি। যাদের কাজে শিথিলতা দেখছি, তাদের মফস্বলে পাঠানো হচ্ছে।
আরএম/এসএস