রইস হত্যা
পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আটক ১০, নতুন কর্মসূচি ঘোষণা ছাত্রসেনার
মাওলানা রইস উদ্দিন হত্যায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে সকালে চট্টগ্রামে বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনার নেতাকর্মীরা। সড়ক ছাড়তে প্রথমে পুলিশ তাদের বোঝানোর চেষ্টা করে। কিন্তু একপর্যায় আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান তারা। পরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে টিয়ার শেল, সাউন্ডগ্রেনেড নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়।
সোমবার (৫ মে) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ১০ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
বিজ্ঞাপন
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘সোমবার সকাল ৯টা থেকে ১০০-২০০ লোক সড়ক অবরোধ করেছেন। তাদের আমরা বোঝানোর চেষ্টা করেছি। ঘণ্টাখানেক বোঝানোর পরও তারা মানেনি। তারা রোড ব্লক করবেই। পরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে টিয়ারশেল ও সাউন্ডগ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয় এবং লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়।’
বিজ্ঞাপন
ওসি সোলাইমান বলেন, ‘এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। হতাহতের বিষয়টি জানা নেই। তারা আবার সংঘবদ্ধ হলে আমরাও আছি। সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে আমরা আছি। সাধারণ মানুষ পুলিশের সাথে আছে। সিটিজেনস ফোরাম আমাদের সাথে আছে। তারা চায় না মানুষের দুর্ভোগ হোক। তাই তারা আমাদের সাথে আছে।’
কাল পতাকা মিছিল করার ঘোষণা ছাত্রসেনার
মাওলানা রইস উদ্দিন হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে ডাকা অবরোধ কর্মসূচিতে বিনা উসকানিতে হামলা হয়েছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা।
সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মাদ সাহেদুল আলম বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ বাধা দিয়েছে। জামায়াত-শিবির পুলিশের সঙ্গে মিলে সন্ত্রাসী হামলা করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। সন্ত্রাসী হামলা ও বেআইনি গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে আগামীকাল বিকেল ৩টায় ঢাকা ও চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে কাল পতাকা মিছিল কর্মসূচি পালিত হবে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, ইমাম রইস উদ্দিন হত্যার জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে হবে।’
তিনি বলেন, শুধু মহানগর নয় জেলার বাঁশখালী, ফটিকছড়িতেও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে।
যেভাবে সংঘর্ষের শুরু
পূ্র্ব নির্ধারিত কর্মসূচি পালন করতে শতাধিক লোকজন মুরাদপুর এলাকায় জড়ো হন। তারা সড়কে বিক্ষোভ শুরু করেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশের একটি দল বিক্ষোভকারীরা ব্যক্তিদের সড়ক থেকে সরে যেতে বলেন। এসময় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে তাদের বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। এ সময় পুলিশও সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাসের ছুড়ে বিক্ষোভকারীরাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় সেনাবাহিনীর একটি দল।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে অন্তত ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। তবে তাদের নাম পরিচয় জানায়নি পুলিশ।
পুলিশের সঙ্গে লাঠিসোঁটা হাতে ওরা কারা!
পুলিশি অ্যাকশনের পাশাপাশি অবরোধ ঠেকাতে একদল লোক লাঠি হাতে তৎপর ছিল মুরাদপুর এলাকায়। তাদের অনেকের মুখে মাস্ক পরা ছিল। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, অবরোধকারী একজনকে আটক করে নিয়ে যাচ্ছিল পুলিশ। পাশ থেকে সাদা পোশাকে মাস্ক পরা একজন আটক যুবকের শরীর তল্লাশি করে। তার হাতে লাঠি ছিল। এসময় আরও কয়েকজনকে লাঠি হাতে দেখা গেছে।
অবরোধকারীরা বলছে, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে জামায়াত-শিবির পুলিশের সঙ্গে মিলে হামলা করেছে।
এর আগে গত শনিবার (৩ মে) চট্টগ্রামে আয়োজিত এক সমাবেশে ৪ মে ‘মার্চ টু গাজীপুর’ এবং ৫ মে সারা দেশে অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দেন সুন্নাত ওয়াল জামাআতের চেয়ারম্যান আল্লামা কাজী মঈনউদ্দিন আশরাফী।
আরএমএন/এমএ