পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বাস করছে অনেক পরিবার

পাহাড় ও পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি পাহাড়ে যারা অবৈধভাবে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছেন তাদের কীভাবে স্থায়ীভাবে ঝুঁকিমুক্ত করা যায় সে ব্যাপারে স্থায়ী সমাধানে যাওয়ার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার কামরুল হাসান।

মঙ্গলবার (৮ জুন) বেলা ১১টার দিকে চট্টগ্রামের মতিঝর্ণা এলাকায় পাহাড় পরিদর্শন করে একথা জানান তিনি। তিনি বলেন, পাহাড় নিয়ে আমরা যাতে স্থায়ী সমাধানের দিকে যেতে পারি সেই চিন্তা ভাবনা চলছে। মূলত সেই কারণেই আজ সরেজমিনে পাহাড় পরিদর্শনে এসেছি। 

তিনি আরও বলেন, অন্যান্য যেসব সংশ্লিষ্ট সংস্থা আছে সবার কাছ থেকে মতামত নেব- কীভাবে কাজ করলে পাহাড়ে যারা ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছেন তাদের স্থায়ীভাবে বাঁচানো যায়। এছাড়া কীভাবে পাহাড় রক্ষা করা যায়, পরিবেশ রক্ষা করা যায় এবং পাহাড়ে যারা বসবাস করছে তাদের  জীবন রক্ষা হয় মতামত নেব। এজন্যই আমরা পাহাড় দেখে যাচ্ছি। পরে বসে একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। 

তিনি বলেন, বিগত সময়ে পাহাড় ধসে মানুষ  মারা গিয়েছিল। এ বছর পাহাড় ধসে যেন মানুষ মারা না যায় সেজন্য আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছি। ৬ তারিখে যে ভারী বৃষ্টি হচ্ছিল তাতে আমরা পাহাড় ধসের আশঙ্কায় ছিলাম। সে জন্য লোকজনকে আমরা আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসছি। এছাড়া যারা ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছেন তাদের ঘরগুলো তালাবদ্ধ করে দিয়েছি। যাতে পাহাড় ধস হলে মৃত্যু না হয়। 

অবৈধভাবে যারা বসবাস করছেন তাদের সড়ানোর কোনো পরিকল্পনা আছে কি না জানতে চাইলে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, যদি কোনো অবৈধ বসতি থাকে অথবা কোনো মামলা-মোকাদ্দমা থাকে, তাহলে আদালত থেকে যেভাবে নির্দেশনা আসবে সেভাবেই কাজ করা হবে। 

চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার কামরুল হাসান বলেন, স্থায়ীভাবে পাহাড় থেকে স্থাপনা উচ্ছেদ করতে হলে আগে জায়গার মালিকানা নির্ধারণ করতে হবে। মালিকানা নিয়ে যেহেতু সমস্যা আছে, আদালতে রিট ও মামলা আছে, তাই মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আমরা কোনো কিছুই করতে পারব না।  

তিনি আরও বলেন, পাহাড় রক্ষা ও অবৈধ বসতিদের কীভাবে স্থায়ীভাবে সমস্যা সমাধান করা যায় তা দেখার জন্য এসেছি। যাতে করে বাস্তবতা দেখে সরকারের কাছে একটি প্রস্তাবনা দিতে পারি। যাতে করে একই ঘটনা বারবার না ঘটে। আগে পাহাড় ধসে অনেক লোক মারা গেছে। একইভাবে যেন আর কোনো মৃত্যু না হয়। 

বিভাগীয় কমিশনার বলেন, যেসব পাহাড় নিয়ে আদালতে মামলা আছে সেগুলোর বিষয়ে আদেশের পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আর যেগুলোতে ঝামেলা নেই সেগুলোতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ  মমিনুর রহমান বলেন, আমরা কিন্তু কাউকে উচ্ছেদ  করছি না। কাউকে উচ্ছেদ করে রাস্তায় ফেলে দেওয়া আমাদের উদ্দেশ্য নয়। আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে- বাংলাদেশের প্রত্যেকটি নাগরিককে রক্ষা করা, তাদেরকে সুরক্ষা করা। সেজন্যই ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের নামিয়ে নিয়ে আসছি। 

বিভাগীয় কমিশনার পাহাড় পরিদর্শনের সময় বাটালি হিলের নিচে ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনায় বসবাসকারীদের ঘরগুলো তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখা যায়। মতিঝর্ণা এলাকায় পরিদর্শন শেষে বিভাগীয় কমিশনার  লালখান বাজার সরকারি প্রাথমিক  বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে পরিদর্শন করেন। যেখানে পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভাবে বসবাস করা কয়েকটি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। 

কেএম/এইচকে