ঢাকায় নগর জলবায়ু ও দুর্যোগ ঝুঁকি প্রশমন কেন্দ্রের উদ্বোধন
জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগের ব্যাপকতা এবং প্রভাবের কারণে বিশ্বজুড়ে পরিবেশগত সংকটের মুখে শহর। এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশ এবং অস্ট্রেলিয়ার কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকায় নগর জলবায়ু ও দুর্যোগ ঝুঁকি প্রশমন কেন্দ্রের উদ্বোধন করেছে। যার লক্ষ্য হলো গবেষণা, উদ্ভাবন, সহযোগিতা এবং প্রচারের মাধ্যমে জলবায়ু কার্যক্রম ও দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া নিয়ে শহুরে স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি করা।
বুধবার (২ জুলাই) ঢাকার একটি হোটেলে নগর জলবায়ু ও দুর্যোগ ঝুঁকি প্রশমন কেন্দ্রের উদ্বোধন করা হয়।
বিজ্ঞাপন
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বর্তমানে বিশ্বের ৫৮ শতাংশ জনসংখ্যা শহুরে এলাকার বসবাস করছে—যার হার ২০৫০ সালের মধ্যে ৭০ শতাংশে পৌঁছাবে। বিশ্বের শহরগুলো ৭৫ শতাংশ বৈশ্বিক শক্তি ব্যবহার করে, ৭০ শতাংশ এরও বেশি কার্বন নির্গমন করে। একইসঙ্গে তাপপ্রবাহ, বায়ু দূষণ, বন্যার মতো ঝুঁকির মুখে শহর। ২০২৪ ছিল রেকর্ড গরমের বছর যে ঢাকার মত শহরের পরিবেশ ও বসবাসযোগ্যতাকে চ্যালেঞ্জ করেছে।
অনুষ্ঠানে অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর অশীষ দামলে বলেন, ঢাকার মতো শহরগুলো একাধিক সংকটের শিকার যার মধ্যে রয়েছে উচ্চ তাপ, বায়ু দূষণের মত বিষয়। এই চ্যালেঞ্জগুলো সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সম্প্রদায়গুলোকে আরও গভীর ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
উদ্বোধিত কেন্দ্রটি শহুরে জলবায়ু ও দুর্যোগের চ্যালেঞ্জগুলো মোকিবেলার জন্য আধুনিক গবেষণা, অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতি তৈরি ও প্রচার, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সম্প্রদায়-নেতৃত্বাধীন উদ্ভাবনের মাধ্যমে কাজ করবে। বর্তমানে এটি ছয়টি মূল থিমে মনোনিবেশ করছে: শহুরে তাপ ও দূষণ, শক্তি পরিবর্তন, সবুজ অবকাঠামো, ভূ-স্থানীয় বিজ্ঞান, জলবায়ু ন্যায় এবং জরুরি প্রতিক্রিয়া ব্যবস্থা।
কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের পৃথিবী ও গ্রহ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মার্টিন ভ্যান ক্রানেনডঙ্ক বলেন, শহুরে উন্নয়ন আমাদের গ্রহকে নতুনভাবে গঠন করছে—এবং এর সঙ্গে আমাদের ঝুঁকিগুলোও। শহুরে এলাকাগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে বড় প্রভাবের সম্মুখীন; কিন্তু একই সঙ্গে পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণও ধারণ করে। কেন্দ্রটি বিজ্ঞান ও সম্প্রদায়কে সংযুক্ত করে স্থানীয়ভিত্তিক, বৈশ্বিকভাবে প্রয়োগিক সমাধান তৈরি করতে।
ঢাকায় সুইডেনের দূতাবাসের প্রথম সচিব ও উন্নয়ন সহযোগিতার উপ-প্রধান নায়োকা মার্টিনেজ-ব্যাকস্ট্রম বলেন, আজকের শহুরে উন্নয়ন জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতাকে উপেক্ষা করতে পারে না। উদ্বোধন হওয়া কেন্দ্রটি শহুরে জনগণের জন্য সমন্বিত পরিকল্পনা গঠনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া সহযোগিতামূলক কার্যক্রমের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ঢাকা জলবায়ু ঝুঁকির বিস্তৃত পরিসরে ক্ষতির সম্মুখীন।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, শহুরে ব্যবস্থাপনায়, সেরা সমাধানগুলো প্রায়ই কমিউনিটি থেকে আসে। আমাদের অভিযোজিত কৌশল, সমন্বিত নেতৃত্ব এবং সম্প্রদায়-নেতৃত্বাধীন ডিজাইন প্রয়োজন আজকের শহুরে চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলার জন্য।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকসুদ জাহেদী বলেন, শহুরে জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা আর বিকল্প নয়; এটি অপরিহার্য। সহযোগিতামূলক পদ্ধতি দুর্যোগ প্রস্তুতি ও মোকাবিলায় সহযোগিতা করে।
এনআই/এসএম