অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরের কার্যক্রমকে সফল হিসেবে দেখছেন রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, দুর্নীতি দমন ও মব সংস্কৃতি ছাড়া সার্বিকভাবে অন্যান্য ক্ষেত্রে সরকার সফলতা দেখিয়েছে। প্রতিবেশী দেশের ষড়যন্ত্র, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের চর্তুমুখী অপতৎপরতা এবং অধিকার আদায়ের নামে দুইশটির বেশি আন্দোলন চলমান থাকার পরেও অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার যে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে পেরেছে সেটা অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার।

রোববার (১০ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবে ইনস্টিটিউট ফর ইনোভেশন ইন পলিসি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কর্তৃক আয়োজিত ‘অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর মন্ত্রণালয় ভিত্তিক পর্যালোচনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন।

বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া বলেন, অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির বিষয়ে খুব একটা বলতে চাইনা, কারণ ড. ইউনূস স্বাভাবিক অবস্থায় দায়িত্ব নেননি। তবে পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে সরকারকে অধিক সতর্ক হতে হবে।

জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জোবায়ের বলেন, দুর্নীতি দমন ছিল সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এক্ষেত্রে সরকার তেমন সফলতা দেখাতে পারেনি। তবে তারা যে একটা বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে আর্থিকভাবে একটি পর্যায়ে নিয়ে গেছে এটি তাদের বড় সফলতা। অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের সংস্কারের একটা বড় অংশ নিয়ে সব রাজনৈতিক পক্ষের মধ্যে ঐকমত্য হয়নি। যা রেড সিগন্যাল। কারণ এতে সংস্কার কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হতে পারে।

এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, বর্তমানে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মূল মনোযোগ নির্বাচন। ফলে বর্তমানে মন্ত্রণালয়ভিত্তিক আলোচনা খুব একটা ফলপ্রসূ হবে না। সরকারকে অবশ্যই একটি সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসরদের ষড়যন্ত্র সম্পর্কেও ওয়াকিবহাল থাকতে হবে।

নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. তৌফিকুল ইসলাম মিথিল বলেন, অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার বিতর্কিত কারিকুলাম বাতিল করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু শিক্ষা কমিশন না হওয়ায় শিক্ষায় কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন আসেনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কাজী মাহবুবুর রহমান বলেন, অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের উচিত সংস্কার কমিশনের মাধ্যমে এমন একটা সিস্টেম তৈরি করা যাতে কর্তৃত্ববাদ আর কখনো ফিরে না আসে। এজন্য রাজনৈতিক ও স্ট্র্যাটেজিকভাবে সংস্কারগুলো করতে হবে।

জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব আলাউদ্দিন মোহাম্মদ বলেন, ড. ইউনূস সরকারের প্রথম ছয় মাস সময় গেছে প্রতিবিপ্লব ঠেকাতে। এখন বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমরা চাই একটা ঐতিহাসিক নির্বাচন। যার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা পুনরায় শুরু হবে।

ওএফএ/এমএন