চট্টগ্রাম নগরের বাকলিয়ায় থানা এলাকায় ডা. ইকবাল নামে এক চিকিৎসককে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বিকেলে থানার রাহাত্তরপুর নুর বেগম মসজিদের পাশে এ ঘটনা ঘটে।

ডা. ইকবাল চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত রয়েছেন। ঘটনাটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক লাইভে তিনি বলেন, বিএনপির হারুনসহ কয়েকজনকে চাঁদা না দেওয়ায় আমাকে মারধর করেছে। আমাকে খুঁজছে মেরে ফেলার জন্য। পুলিশকে জানালেও তারা এখনো আসেননি।

পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, নগরের বাকলিয়া থানার কেবি আমান আলী রোড এলাকায় একটি ভবন নির্মাণ করছিলেন ডা. ইকবাল। এটি নিয়ে স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে তার বিরোধ সৃষ্টি হয়। ডা. ইকবালের প্রতিপক্ষের অভিযোগ, তিনি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) নকশা না মেনে ভবন নির্মাণ করছিলেন। এ নিয়ে সিডিএ ও দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) একাধিকবার অভিযোগও করা হয়। মঙ্গলবার সিডিএ ইমারত কমিটি-১ এর প্রকৌশলী কাজী কাদের নেওয়াজ ভবনটি পরিদর্শনে আসেন।

এসময় বৃহত্তর রাহাত্তারপুল সমাজ কল্যাণ পরিষদের প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট পক্ষের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। একপর্যায়ে ইকবাল, তার পরিবারের সদস্য, মহল্লা কমিটির প্রতিনিধি ও অপরপক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। সেখান থেকে মারামারির সূত্রপাত হয়। পরে ডা. ইকবাল একটি ভবনে গিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভ করেন। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা ফরিদুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ডা. ইকবাল সিডিএ থেকে ৭তলার অনুমতি নিয়ে ৮তলা ভবন নির্মাণ করছেন। পাশাপাশি তিনি রাস্তার জন্য নির্ধারিত অংশ ছেড়ে দেননি। এ কারণে পাশের সবাই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন। মহল্লা কমিটি বিচারও করেছে। কিন্তু তিনি কারো কথা শোনেননি। তার চাঁদা দাবির বিষয়টিও মিথ্যা। আমার ছেলেও একজন ডাক্তার। তাছাড়া হারুনের চাঁদা দাবির বিষয়টি হাস্যকর। তিনি কমপক্ষে হাজার কোটি টাকার মালিক। প্রতিবেশীর মধ্যে ঝামেলা হওয়ায় মীমাংসার জন্য তিনি এসেছিলেন।

বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইখতিয়ার উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল পেয়ে বাকলিয়া থানার টহল দল ঘটনাস্থলে যায়। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে ডা. ইকবাল অনুমোদিত নকশার বাইরে ভবন নির্মাণের কাজ করছেন বলে স্থানীয়রা সিডিএতে অভিযোগ করেছিলেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে সিডিএ কর্তৃপক্ষ চিঠি দিয়ে অনুমোদিত নকশাবহির্ভূত অংশ অপসারণ ছাড়া সব ধরনের নির্মাণকাজ বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেয়। ঘটনার দিন সিডিএর লোক ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। এসময় ডা. ইকবাল ও প্রতিপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং মারামারি হয়। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

এমআর/এসএসএইচ