বাবা মায়ের সঙ্গে যমজ কন্যা জুহি-রুহি / ঢাকা পোস্ট

নীলফামারীর জলঢাকায় জন্মগতভাবে জোড়া লাগা যমজ শিশু জুহি ও রুহিকে সফলভাবে আলাদা করতে সক্ষম হয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের চিকিৎসকরা। শিশু সার্জারি বিভাগের (ইউনিট-২) অধ্যাপক ডা. কানিজ হাসিনার (শিউলি) নেতৃত্বে পরিচালিত এ অস্ত্রোপচারে অংশ নেন হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসকরা।

বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) বিষয়টি নিশ্চিত করেন শিশু সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. কানিজ হাসিনা (শিউলি)।

তিনি জানান, জোড়া লাগানো দুই শিশু রুহি ও জুহি গত ১৩ জানুয়ারি ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হয়। যেহেতু তারা ছোট ছিল তাই অবজারভেশনে রেখে মেডিকেলে বোর্ড গঠন করার পর চিকিৎসা দেওয়া হয় । গত ২৪ জুন চার ঘণ্টা সফল অস্ত্রোপচার করে তাদের পৃথক করা হয়। জটিল এই সার্জারিতে অংশ নেন– শিশু সার্জারি ছাড়াও প্লাস্টিক সার্জারি, পেডিয়াট্রিক সার্জারি, নিওনেটোলোজি, রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং, অর্থোপেডিক, নবজাতক বিভাগ, নিউরো সার্জারি ও অ্যানেস্থেসিওলোজি বিভাগের চিকিৎসকরা।

অধ্যাপক কানিজ হাসিনা (শিউলি)

তিনি আরও জানান, অস্ত্রোপচারের পর দুই শিশুকে হাসপাতালের পোস্ট অপারেটিভ ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (পিআইসিইউ) রাখা হয়। দীর্ঘ সময় ধরে নিবিড় পর্যবেক্ষণ, বিশেষায়িত চিকিৎসা ও সেবার পর বর্তমানে তারা সুস্থ আছেন। তাদের খাওয়া-দাওয়া, পায়খানা-পস্রাব করতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। অপারেশনের আগেও তাদের প্রস্রাব-পায়খানা এবং খাওয়া-দাওয়ার কোনো সমস্যা হতো না। সুস্থ অবস্থায় আজ তাদের ছুটি দেওয়া হয়েছে।

ডা. কানিজ হাসিনা বলেন, এটি ছিল দীর্ঘ ও জটিল অস্ত্রোপচার। প্রতি মুহূর্তে জুহি ও রুহির সুরক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। নীলফামারীর রিকশাচালক বাবা ও গৃহিণী মায়ের দ্বিতীয় সন্তান জুহি ও রুহিকে দীর্ঘ সময় হাসপাতালে থাকতে হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসাসামগ্রীর সহায়তা দিয়েছে। এই সফলতার জন্য পুরো চিকিৎসক টিম, নার্স ও হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

যমজ শিশু জুহি ও রুহির মা শিরিনা বেগম জানান, আমাদের ১০ বছরের একটি ছেলে সন্তান আছে। বর্তমানে জুহি ও রুহির বয়স ৭ মাস ২৩ দিন। জন্মের পর তাদের দুজনের শরীর জোড়া লাগানো ছিল। ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসার পর দীর্ঘ পাঁচ-ছয় মাস চিকিৎসা শেষে গত জুন মাসে তাদের অপারেশন করে আলাদা করা হয়। দুই মেয়ে এখন ভালো আছে। চিকিৎসকরা আজ আমাদের ছাড়পত্র দিয়েছেন। চিকিৎসক এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।

এসএএ/বিআরইউ