‘বঙ্গবন্ধু লাউঞ্জ’র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের অংশ হিসেবে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে ‘বঙ্গবন্ধু লাউঞ্জ’র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

সোমবার (১৪ জুন) জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে ‘বঙ্গবন্ধু লাউঞ্জ’টি উদ্ধোধন করা হয়। লাউঞ্জ উদ্বোধনকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, লাউঞ্জটিতে বিভিন্ন বই, ছবি, প্রামাণ্যচিত্র ও গ্রাফিক্যাল ডিসপ্লের মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্মের নানা দিক তুলে ধরা হয়েছে। বহপাক্ষিকতাবাদ, বিশেষ করে জাতিসংঘের প্রতি জাতির পিতার যে গভীর আস্থা ও বিশ্বাস ছিল, বঙ্গবন্ধু লাউঞ্জের এই সংগ্রহ যেন তাই ফুটিয়ে তুলেছে।

ড. মোমেন লাউঞ্জটিতে বঙ্গবন্ধুর ওপর আরও বই ও প্রদর্শণীসামগ্রী প্রদান করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। 

জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেন, গতবছর লাউঞ্জটির স্থাপনের কাজ শেষ হলেও কোভিড-১৯ জনিত কারণে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন সম্ভব হয়নি। এটি অত্যন্ত আনন্দের যে, অবশেষে আমরা পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে লাউঞ্জটি উদ্বোধনের জন্য পেয়েছি। আমার বিশ্বাস, লাউঞ্জটি মিশনে আগত সুধিজনদের বিশ্ব শান্তির প্রতি জাতির পিতার স্বপ্ন ও আদর্শের কথা স্মরণ করিয়ে দেবে।

জাতিসংঘের বাংলাদেশ মিশন জানায়, মিশনে আসা জাতিসংঘ ও সদস্য রাষ্ট্রসমূহের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিবর্গের বৈঠকের জন্য লাউঞ্জটি ব্যবহৃত হবে। ফলে তারা বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শ সম্বন্ধে ধারণা লাভের সুযোগ পাবেন। 

জাতিসংঘের অপারেশনাল সাপোর্ট বিভাগের প্রধান আন্ডার সেক্রেটারির বাংলাদেশের প্রশংসা

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অসামান্য অবদানের জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেছেন জাতিসংঘের অপারেশনাল সাপোর্ট বিভাগের প্রধান আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল অতুল খারে। সোমবার (১৪ জুন) পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন তিনি। এ সময় আতুল খারে বাংলাদেশের প্রশংসা করেন।

বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের প্রতি বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি পূনর্ব্যক্ত করেন। তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী পরিবহনে বাংলাদেশ বিমানকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে সহায়তাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহায়তা করার জন্য আতুলকে ধন্যবাদ জানান।

এ সময় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অসামান্য অবদানের জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেন জেনারেল খারে। শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের মাঠ পর্যায়ে জাতিসংঘের পরিবেশ সংরক্ষণ সংক্রান্ত কৌশল বাস্তবায়নে নেতৃত্বের জন্য বাংলাদেশের প্রতি ধন্যবাদ জানান তিনি। প্রয়োজনীয় সরঞ্জামসহ শান্তিরক্ষী মোতায়েনে বাংলাদেশের যে সার্বক্ষণিক প্রস্তুতি রয়েছে তার প্রশংসা করেন খারে।

শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নারীর অংশগ্রহণ আরও বৃদ্ধি করার মাধ্যমে নারী শান্তিরক্ষীদের দ্বারা কৌশলগত যোগাযোগ এগিয়ে নিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী যে প্রস্তাব দেন তা স্বাগত জানান খারে। ড. মোমেন অতুল খারেকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বিষয়ে তার অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের মানুষকে জানানোর অনুরোধ করেন।

জাতিসংঘের বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগদান উপলক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিউইয়র্ক অবস্থান করছেন। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে তিনি এলডিসি বিষয়ক একটি যৌথ থিমেটিক সভায় অংশগ্রহণ করবেন। এছাড়া জাতিসংঘ মহাসচিব, সাধারণ পরিষদের সভাপতিসহ জাতিসংঘের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পাশাপাশি বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন, জাতিসংঘ সদরদফতর ও অন্যান্য সদস্যরাষ্ট্রের আয়োজনে অনুষ্ঠিতব্য ‘মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি : সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের অবস্থা’ ও ‘স্বল্পোন্নত দেশসমূহের টেকসই উত্তরণ এবং পুনরায় ফিরে আসা রোধে সক্ষমতা বিনির্মাণ’ শীর্ষক দুটি ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

এনআই/এইচকে