প্রাথমিক জরিপ
বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা চান ৯৭% জনগণ, রেফারেল সিস্টেমে ৭২%
দেশের ৯৭ শতাংশ জনগণ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা বিনামূল্যে পাওয়ার পক্ষে মত প্রকাশ করেছেন। একই সঙ্গে ৭২ শতাংশ অংশগ্রহণকারী রেফারেল সিস্টেম বাস্তবায়নের জন্য দাবি জানিয়েছেন। যার মাধ্যমে প্রাথমিক চিকিৎসা পাওয়ার পর গুরুতর রোগীদের উন্নত সেবার জন্য বিশেষায়িত হাসপাতালে রেফার করা হবে।
জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, স্বাস্থ্য খাতে সরকারের ভূমিকা আরও শক্তিশালী হওয়ার পাশাপাশি জনগণের কাছে সাশ্রয়ী ও কার্যকর স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তা।
বিজ্ঞাপন
বুধবার (৩০ আগস্ট) প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম জোরদারের বিষয়ে আয়োজিত সেমিনারে সম্প্রতি পরিচালিত এক গবেষণা জরিপের ফলাফল তুলে ধরে হয়।
কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের মাঠ প্রশাসন পরিচালক আসিফ মাহমুদ এসব তথ্য জানান।
বিজ্ঞাপন
জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করে ডা. আসিফ জানান, অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৯২% মানুষ দাবি করেন- স্বাস্থ্য খাতে ব্যয়ের ভার সরকারকেই বহন করতে হবে। তাদের মতে, সরকারি উদ্যোগ ছাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা সবার জন্য সহজলভ্য করা সম্ভব নয়। বিশেষত– বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর লাভের চাপ থাকার কারণে দরিদ্র জনগণের জন্য সাশ্রয়ী চিকিৎসা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। এক্ষেত্রে সরকারের দায়িত্ব বাড়ানো এবং প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ করার মাধ্যমে জনগণের জন্য সহজলভ্য সেবা নিশ্চিত করা জরুরি।
জরিপে অংশ নেওয়া ৭২% জনগণ দাবি করেছেন, রেফারেল সিস্টেম আরও কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা উচিত। তাদের মতে, কমিউনিটি ক্লিনিক বা অন্যান্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র থেকে গুরুতর রোগীদের বিশেষায়িত হাসপাতালে রেফার করলে রোগীর সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। বর্তমানে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে যেহেতু রেফারেল সিস্টেম রয়েছে তবুও তা আরও শক্তিশালী করা প্রয়োজন।
ট্রাস্টের মাঠ প্রশাসনের পরিচালক বলেন, বর্তমানে কমিউনিটি ক্লিনিক দেশের গ্রামীণ ও প্রান্তিক জনগণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এই ক্লিনিকগুলোতে বিনামূল্যে সেবা দেওয়া হচ্ছে এবং সেখানে ২০ প্রকারের ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে। সেবাগ্রহীতারা চিকিৎসা সেবা নেওয়ার পর যদি কোনো বিশেষায়িত চিকিৎসার প্রয়োজন হয়, তাহলে তাদের রেফারেল সিস্টেমের মাধ্যমে বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোতে পাঠানো হয়।
কমিউনিটি ক্লিনিকের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরে ডা. আসিফ মাহমুদ বলেন, আমরা আগামী দিনে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে ডিজিটাল রেফারেল সিস্টেম স্থাপন করতে চাই, যা রোগীর সেবা পাওয়ার প্রক্রিয়াকে আরও দ্রুত ও স্বচ্ছ করবে। একইসঙ্গে স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়নে সেবা প্রদানকারী কর্মীদের প্রশিক্ষণ, উন্নত যন্ত্রপাতি সরবরাহ এবং ঝুঁকিপূর্ণ কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো পুনর্নির্মাণসহ সেগুলোর অবকাঠামো উন্নয়নের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
এছাড়াও আগামী দিনে আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের কথাও তুলে ধরেন এই কমিউনিটি ক্লিনিক কর্মকর্তা, যা কমিউনিটি ক্লিনিকের কর্মীদের জন্য অত্যাধুনিক প্রশিক্ষণ প্রদান করবে।
আসিফ মাহমুদ আরও জানান, জরিপের ফলাফলে যে স্বাস্থ্য খাতে সরকারের দায়িত্ব বাড়ানো এবং সেবা ব্যবস্থার উন্নতি দাবি করা হয়েছে, সেটি বাস্তবায়ন করতে হলে সরকারি বাজেট বাড়ানো এবং স্বাস্থ্যসেবা সিস্টেম আরও উন্নত করা অত্যন্ত জরুরি।
টিআই/বিআরইউ