দুদকের অভিযান
ডিএসসিসিতে জাল ভাউচারে ৫ কোটি টাকা আত্মসাতের প্রমাণ মিলেছে
ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে বিএনপি নেতাকর্মীদের আন্দোলনে মে-জুন মিলিয়ে ৪০ দিন সিটি কর্পোরেশনের সেবা কার্যক্রম বন্ধ ছিল। অথচ ওই সময়ে জ্বালানি তেলবাবদ প্রায় ৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে- এমন অভিযোগ খতিয়ে দেখতে অভিযান চালিয়ে প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কার্যালয়ে এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান পরিচালনা করে বলে জানা গেছে।
বিজ্ঞাপন
এ বিষয়ে দুদকের উপপরিচলক মো. আকতারুল ইসলাম বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তাদের জন্য বরাদ্দকৃত গাড়ির জ্বালানি তেলের ভুয়া খরচ দেখিয়ে কয়েক কোটি টাকা উত্তোলনপূর্বক আত্মসাতের অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের পরিবহন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিল ভাউচার, গাড়ির লগবুক, ফুয়েল কুপন ইত্যাদিসহ অভিযোগ সংশ্লিষ্ট সমুদয় রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে এনফোর্সমেন্ট টিম। এছাড়াও এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযোগ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। রেকর্ডপত্রে সিটি কর্পোরেশনের কার্যক্রম ৪০ দিন বন্ধ থাকলেও ভুয়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে তেল খরচের নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের প্রাথমিক সত্যতা রয়েছে পাওয়া গেছে।
তিনি আরও বলেন, অভিযানকালে সকল রেকর্ডপত্র বিস্তারিতভাবে পর্যালোচনা শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবে এনফোর্সমেন্ট টিম।
বিজ্ঞাপন
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র হিসেবে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে বিএনপির নেতাকর্মী ও সিটি কর্পোরেশনের কিছু কর্মচারীর আন্দোলনের কারণে চলতি বছরের ১৪ মে থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত ৪০ দিন নগর ভবনের সেবা কার্যক্রম বন্ধ ছিল। সংস্থাটিতে প্রতি মাসে জ্বালানি খাতে খরচ হয় প্রায় ৫ কোটি টাকা। এপ্রিল, মে ও জুন মাসের খরচ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মে ও জুন মাসে নগর ভবন ৪০ দিন বন্ধ থাকলেও খরচ হয়েছে স্বাভাবিক সময়ের সমান তেল। অথচ এই সময়ে কার্যত কোনো অফিস কার্যক্রম ছিল না। এ ধরনের কার্যকলাপ সরাসরি দুর্নীতি ও রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বতর্মানে সংস্থাটিতে কর্মকর্তারা ৯১টি গাড়ি ব্যবহার করছেন। মোটরসাইকেল ব্যবহার করছেন ১০১টি। এ ছাড়া বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজে নিয়োজিত যানবাহনসহ বাকি কাজে ব্যবহৃত মোট গাড়ি ৪১৮টি। সংস্থাটিতে বর্তমানে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বর্জ্য-উচ্ছেদ অভিযানে ব্যবহারের গাড়ি মোট ৬১০টি। প্রতি মাসে জ্বালানি বাবদ সংস্থাটির খরচ হয় প্রায় ৫ কোটি টাকা। এসব যানবাহনের পেছনে শুধু জ্বালানি বাবদই বছরে ৬০ কোটি টাকার বেশি ব্যয় হচ্ছে। জ্বালানির ওই ব্যবহার অনেকটাই কাগজে–কলমে বলে অভিযোগ উঠেছে।
আরএম/আরএআর