সিন্ডিকেট ভাঙতে বামার কমিটি গঠন
অশুভ শক্তির নিয়ন্ত্রণে কীটনাশকের বাজার
দেশের কৃষি শিল্পকে এগিয়ে নেওয়ার পরিবর্তে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল শুল্ক ও নীতির মাধ্যমে বাধা সৃষ্টি করছে। এতে কৃষক ও স্থানীয় উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বহুজাতিক কোম্পানি এবং কিছু প্রভাবশালী কর্মকর্তা মিলে গড়ে তুলেছে একটি সিন্ডিকেট, যা বারবার সরকারের নজরেও ভাঙা যাচ্ছে না। চিঠি, বৈঠক ও অনুরোধের পরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। এমন প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ অ্যাগ্রোকেমিক্যাল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বামা) চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) গঠিত কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন বামার প্রধান উপদেষ্টা ও এসিআই গ্রুপের চেয়ারম্যান আনিস-উদ-দৌলা।
বিজ্ঞাপন
অন্যান্য সদস্যরা হলেন- সংগঠনের সভাপতি ও ন্যাশনাল অ্যাগ্রিকেয়ার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএসএম মোস্তাফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এম এ মান্নান ও সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর খান। কমিটি শিগগিরই প্রধান উপদেষ্টা ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সিন্ডিকেট ভাঙতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানাবে। বামার পক্ষ থেকে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
কৃষি খাতের উদ্যোক্তারা জানান, ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ এলডিসিভুক্ত হওয়ায় আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী দেশে পণ্যের পেটেন্ট আইন কার্যকর হওয়ার কথা নয়। কিন্তু বালাইনাশক কারিগরি উপদেষ্টা কমিটি (পিটাক) পেটেন্টের নামের আড়ালে দেশীয় উৎপাদনকে বাধাগ্রস্ত করছে।
বিজ্ঞাপন
এই আমদানির ক্ষেত্রেও ‘এক দেশ, এক উৎস’ নীতি চাপিয়ে প্রতিযোগিতার সুযোগ প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে। এর ফলে কৃষকদের প্রায়ই একই পণ্য চার থেকে পাঁচ গুণ বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। স্থানীয় শিল্পকে টিকিয়ে রাখার পরিবর্তে এমন নীতি গ্রহণ করা হয়েছে, যা উৎপাদন খরচ বাড়াচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, প্রস্তুতকৃত কীটনাশক পণ্য মাত্র পাঁচ শতাংশ শুল্কে আমদানি করা যায়, অথচ সেই পণ্য উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানিতে দিতে হচ্ছে ৫৮ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক। উদ্যোক্তারা বলছেন, এটা অযৌক্তিক এবং কৃষি-বান্ধব নীতির পরিপন্থি।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ কীটনাশক উৎপাদনের কাঁচামালে শুল্ক কমানোর ঘোষণা দিলেও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এখনো নীতিতে কোনো পরিবর্তন আনেনি।
এর আগে ২৫ আগস্ট এনবিআরে বালাইনাশক আমদানিকারক ও দেশীয় উৎপাদনকারীদের সঙ্গে বৈঠক হয়, যেখানে সহযোগী উপাদানের শুল্ক কমানো বা শুল্কমুক্তির বিষয়ে একমত হন খাতসংশ্লিষ্টরা। উদ্যোক্তাদের দাবি, এই প্রস্তাব দ্রুত বাস্তবায়ন না হলে কৃষি খাতের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা আরও কমে যাবে এবং কৃষককে চরম ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।
এসআই/এমজে