৫ কোটি টাকার সম্পদ ও প্লট জালিয়াতির মামলায় ফাঁসলেন বিচারপতি মানিক
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
অবৈধ সম্পদ অর্জন ও তা মানিলন্ডারিং এবং জালিয়াতি করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে মামলা দুটি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে (ঢাকা-১) মামলা দুটি করা হয়। সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞাপন
অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে আসামি করা হয়েছে। মামলায় বিচারপতি হিসেবে কর্মরত থাকাকালে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৫ কোটি ৩৯ লাখ ৬৬ হাজার ৮২০ টাকার সম্পদের মালিকানা অর্জনপূর্বক তা দখলে রাখা এবং হস্তান্তর, রূপান্তর ও স্থানান্তরের মাধ্যমে বিদেশে পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা; মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় মামলাটি করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
অপরদিকে রাজউকের প্লট জালিয়াতির মামলায় এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকসহ সাত জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার অপর আসামিরা হলেন— সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের স্ত্রী কাশমিরি কামাল, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল হুদা, রাজউক সদস্য আবু বক্কার সিকদার, এম মাহবুবুল আলম, সাবেক চেয়ারম্যান জি এম জয়নাল আবেদীন ভুইয়া ও সাবেক আব্দুল হাই।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণার আশ্রয়ে মিথ্যা হলফনামা দাখিল করে রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে মূল বরাদ্দ গ্রহিতার নামে বরাদ্দকৃত ১৮৮২০২নং কোডের ১৬নং সেক্টরের ১১৬নং রাস্তার ০৩৬নং প্লট বরাদ্দ দিয়ে পরবর্তীতে লিজ দলিলের শর্ত ভঙ্গ করে ওই প্লট হস্তান্তর করার অনুমতি দিয়ে প্লটটি আত্মসাৎ করেছেন। দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় মামলাটি করা হয়েছে।
দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন বাদী হয়ে মামলা দুইটি দায়ের করেছেন বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ভারতে পালাতে গিয়ে ২০২৪ সালের ২৩ আগস্ট বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) হাতে আটক হন সাবেক বিচারপতি মানিক। সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে আটকের পর ৫৪ ধারায় মানিককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে দায়ের করা ৬টি হত্যা মামলায় তাকে আসামি দেখিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিচারপতি শামসুদ্দিন মানিকের বাংলাদেশের পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব রয়েছে। সেখানে মানিকের একাধিক বাড়িও রয়েছে। ২০১২ সালে বিচারপতি থাকা অবস্থায় লন্ডনে তিনি হামলার শিকার হয়েছিলেন। এ ছাড়া ২০১৫ সালে অবসর গ্রহণের পর লন্ডনে ফের হামলার শিকার হন।
আরএম/এনএফ