মোহাম্মদপুরে ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে চাঁদাবাজির সময় গ্রেপ্তার ৫
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলা এলাকার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজির সময় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টায় বসিলা হাউজিং সিটি এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তাররা হলেন– সাইফুল ইসলাম রাব্বি (২৮), হাসিবুর রহমান ফরহাদ (৩১), আবদুর রহমান মানিক (৩৭), আবু সুফিয়ান (২৯) ও মো. শাহিন (৩৮)।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয়রা জানান, রোববার সন্ধ্যায় সমন্বয়ক পরিচয়ে সেফ হাসপাতাল নামের একটি হাসপাতালে বাচ্চা মারা যাওয়া নিয়ে একটি চক্র চাঁদা দাবি করছিল। তারা কয়েকজন এসে হাসপাতালের মালিকের কাছে চাঁদা চেয়ে মব তৈরি করে। হাসপাতালের মালিক সেনাবাহিনীকে ফোন করলে তারা এসে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে।
আরও পড়ুন
বিজ্ঞাপন
হাসপাতালের মালিক শিল্পী আক্তার বলেন, আমার হাসপাতালে একটি মৃত শিশু জন্ম নেওয়াকে কেন্দ্র করে সন্ধ্যায় কয়েকজন চাঁদা চেয়ে হুমকি দেয়। কয়েক দফায় তারা আমার এবং আমার ছেলের কাছে চাঁদা চাইছিল। আমি চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আরও কয়েকজন সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে আমার প্রতিষ্ঠানে যায়। আমি এ অবস্থা দেখে সেনাবাহিনীকে ফোন করলে তারা ঘটনাস্থলে এসে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পাঁচজনকে নিয়ে যায়। আমি থানায় গিয়ে তাদের বিরুদ্ধে একটি চাঁদাবাজি মামলার আবেদন করেছি।
পুলিশের একটি সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তারদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম রাব্বি মোহাম্মদপুর থানায় একটি চাঁদাবাজি মামলার চার নম্বর আসামি। দীর্ঘদিন তিনি পলাতক ছিলেন। সাইফুল ইসলাম রাব্বি মোহাম্মদপুর থানার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ছিলেন। এরপর তাকে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটি থেকে বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিক বলেন, চাঁদাবাজির ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করে আমদের কাছে সেনাবাহিনী হস্তান্তর করেছে। তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির দায়ে একজন হাসপাতাল মালিক মামলার আবেদন করেছেন। বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের বিরুদ্ধে একটি চাঁদাবাজির মামলা হবে। আটকদের মধ্যে রাব্বি নামে একজনের বিরুদ্ধে আমাদের থানায় আগের চাঁদাবাজির মামলা আছে।
এর আগে গত ১৯ মে রাত ১১টার পর ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে হাক্কানী পাবলিশার্সের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফার বাসা ঘেরাও করে উত্তেজিত জনতা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। এরপর বাসার দারোয়ানকে ধাক্কা দিয়ে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন তারা। ৯৯৯-এ কল করে পরিস্থিতি জানিয়ে অভিযোগ করার পর ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। গোলাম মোস্তফাকে গ্রেপ্তারে চাপ ও পুলিশের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায়ও জড়িয়ে পড়েন উপস্থিত কয়েকজন। এ ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মোহাম্মদপুর থানার সমন্বয়ক সাইফুল ইসলাম রাব্বিসহ কয়েকজনকে হেফাজতে নেয় ধানমন্ডি থানা পুলিশ। পরদিন ধানমন্ডি থানায় উপস্থিত হয়ে বৈষম্যবিরোধী নেতা আব্দুল হান্নান মাসউদ মুচলেকা দিয়ে সাইফুল ইসলাম রাব্বিসহ অন্যদের ছাড়িয়ে আনেন।
এসএএ/এসএসএইচ