দীর্ঘ ৩২ দিন ধরে শ্রম ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেও দাবি পূরণ না হওয়ায় সচিবালয় অভিমুখে পদযাত্রা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ আউটসোর্সিং কর্মচারী ঐক্য পরিষদ। 

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে সংগঠনের শত শত কর্মচারী শ্রম ভবনের সামনে জড়ো হন এবং বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকাজুড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন করেছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে জলকামান ও প্রিজন ভ্যানও।

সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত ৩০ আগস্ট শাহবাগে মহাসমাবেশ ও মিছিলের মাধ্যমে তারা তাদের দাবিগুলো উপস্থাপন করেছিলেন। এরপর থেকে টানা অবস্থানসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করলেও সরকার এখনো তাদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

আন্দোলন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন, শ্রমিক অধিকার ও ট্রেড ইউনিয়ন স্বীকৃতি, শোভন মজুরি ও জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ঘোষণাসহ বেশ কিছু যৌক্তিক দাবি রয়েছে। কিন্তু সরকার এগুলোতে কোনো গুরুত্ব দিচ্ছে না।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. ইকবাল হোসেন বাবু বলেন, আমাদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে। শ্রমিকেরা মানবেতর জীবনযাপন করছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়ছে, অথচ মজুরি বাড়ছে না। শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে সরকারের ভূমিকা কেবল মালিক পক্ষকে সুবিধা দেওয়া।

অন্যদিকে, শ্রম ভবনের সামনে সকাল থেকে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। অবস্থানকারীদের ঘিরে রাখা হয়েছে জলকামান ও প্রিজন ভ্যান দিয়ে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

সংগঠনটির সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা চাই সরকার অবিলম্বে শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করুক এবং শ্রমিক অধিকার নিশ্চিত করুক। আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা আমাদের অধিকার আদায় করব।

শ্রমিক নেতারা আরও অভিযোগ করেন, দেশে রাষ্ট্রায়াত্ত প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে দেওয়ায় হাজার হাজার শ্রমিক বেকার হয়েছেন। গার্মেন্টসসহ বেসরকারি খাতেও কারখানা বন্ধ হওয়া ও ছাঁটাইয়ের ফলে বেকারত্ব বেড়েই চলেছে। অথচ কর্মসংস্থান ও শ্রমিকের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সরকারের কোনো উদ্যোগ নেই। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে বলেও মন্তব্য করেন তারা।

আরএইচটি/জেডএস