যানজটে আটকা থাকা রিপন একটু পরপর সামনের দিকে উঁকি দিয়ে দেখছেন গাড়ির চাকা চলছে কি-না। কিন্তু গাড়ির আর চাকা নড়ে না। রিপনের মতো এমন অসহ্য যানজটের কবলে পড়েছেন হাজারো যাত্রী।

রাজধানীর এয়ারপোর্ট-উত্তরা রোডে গত কয়েকদিন ধরেই যানজটে নাকাল মানুষজন। সকালে অফিসগামী মানুষদের ভোগান্তির যেন শেষ নেই। তার ওপর আষাঢ়ের বৃষ্টি ভোগান্তির মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। সকাল থেকে মহাখালী-মিরপুর বা বাড্ডার দিক থেকে উত্তরা-আব্দুল্লাপুর-টঙ্গীগামী সব যানবাহনকে দীর্ঘ যানজটে পড়তে হয়েছে।

আলাপকালে বাসযাত্রী রিপন বলেন, বিমানবন্দর থেকে রাজলক্ষ্মী আসতে সময় লেগেছে ৩৫ মিনিট। এখানে কতক্ষণ বাসে বসে থাকতে হবে তার হিসাব করা মুশকিল। শ্যামলী থেকে আসা এ যাত্রী জানান, খিলক্ষেত থেকে জ্যাম শুরু হয়েছে। কখনো থেমে থেমে চলছে গাড়ি আবার কখনো বা গাড়ির চাকা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

যানজটে আটকে থাকা যাত্রীরা জানান, দেড় কিলোমিটার রাস্তা যেতে সময় লাগছে আধা ঘণ্টার বেশি। যেখানে ৫ থেকে ৮ মিনিট সময় লাগার কথা সেখানে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট সময় লাগছে। এতে গন্তব্যে পৌঁছাতে গিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়ছেন যাত্রীরা। প্রায় ৫ গুণ বেশি সময় লাগছে রাস্তায়।

রাজধানীর মহাখালী থেকে আব্দুল্লাহপুরগামী এবং আব্দুল্লাহপুর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করা সব পরিবহনই যানজটে নাকাল অবস্থা। একে তো বৃষ্টি তার ওপর যানজট। দুই মিলিয়ে বেশ বেকাদায় গন্তব্যে ফেরা যাত্রীরা।

বাস থেকে নেমে পায়ে হেঁটে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন তানিয়া নামের এক যাত্রী। আলাপকালে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, কী করব বলেন, তাড়াতাড়ি যেতে হবে। কিন্তু গাড়িতে বসে থাকলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যেতে পারব বলে মনে হয় না। তাই বাধ্য হয়ে হেঁটে রওনা হলাম। এই জ্যাম যেন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।

শনিবার (১৯ জুন) সরেজমিনে দেখা যায়, আব্দুল্লাহপুরগামী বাসগুলো বিমানবন্দর, জসিমউদ্দিন, আজমপুর, হাউজবিল্ডিংসহ আশপাশের এলাকায় বাসগুলো রাস্তায় অনেকটা দাঁড়িয়ে আছে। মিনিট ২০ পরপর কিছু বাস ছাড়ছে। দুই থেকে তিন মিনিট চলার পর আবার থেমে যাচ্ছে। গন্তব্যে পৌঁছা নিয়ে যাত্রীদের মাঝে দেখা গেল দুশ্চিন্তার ছাপ। অনেকেই বাস থেকে নেমে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছার চেষ্টা করছেন।

মানিক নামের এক যাত্রী বলেন, রাস্তায় এমন পরিস্থিতি যেন নিয়মিত হয়ে গেছে। বিশেষ করে বনানী থেকে আব্দুল্লাহপুর পর্যন্ত যাতায়াত করা খুবই কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সকাল থেকে রাজলক্ষ্মী মোড়ে দায়িত্বপালন করা ট্রাফিক পুলিশ সদস্য কাসেম জানান, শনিবার সকাল থেকেই রাস্তায় অনেক জ্যাম শুরু হয়েছে। বৃষ্টি হলেই যানজটে আটকে থাকে বাসগুলো। অফিস টাইম হওয়ায় অনেকেই দুর্ভোগে পড়েছেন। গাজীপুর এলাকার রাস্তায় কাজ চলছে বলে নাকি এতো জ্যাম হচ্ছে।

একে/ওএফ