ই–কমার্সে প্রতারণা ঠেকাতে আসছে সেন্ট্রাল লজিস্টিক ট্র্যাকিং প্ল্যাটফর্ম
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, ই–কমার্স খাতে প্রতারণা ও অর্থ লোপাট ঠেকাতে ‘সেন্ট্রাল লজিস্টিক ট্র্যাকিং প্ল্যাটফর্ম’ চালু করতে যাচ্ছে সরকার। নতুন এই ডিজিটাল ব্যবস্থায় ক্রেতার দেওয়া অর্থ সরাসরি বিক্রেতার কাছে না গিয়ে একটি ভার্চুয়াল অ্যাকাউন্টে সংরক্ষিত থাকবে। পণ্য সঠিকভাবে ডেলিভারি ও যাচাই–বাছাই সম্পন্ন হওয়ার পর সেই অর্থ বিক্রেতার অ্যাকাউন্টে পৌঁছাবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং বাংলাদেশ ডাক বিভাগের যৌথ উদ্যোগে এ প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলা হচ্ছে৷
বুধবার (৮ অক্টোবর) আগারগাঁও ডাক ভবনে বিশ্ব ডাক দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
ফয়েজ তৈয়্যব বলেন, দেশের শহর ও গ্রামের জন্য ডিজিটাল অ্যাড্রেস ম্যানেজমেন্ট এবং জিও ফেন্সিং এখন সময়ের দাবি। বাংলাদেশ ডাক বিভাগ ইতোমধ্যে বেসরকারি ই–কমার্স প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয়ের ভিত্তিতে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে। এর মাধ্যমে নাগরিকের ঠিকানা ও তথ্য ব্যবস্থাপনা নিরাপদভাবে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সংরক্ষণ ও ব্যবহার করা হবে।
আরও পড়ুন
বিজ্ঞাপন
তিনি জানান, ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ডাক আইন হালনাগাদ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি শিগগিরই অ্যাড্রেস ম্যানেজমেন্ট পাইলট প্রোগ্রাম চালু হবে, যা সরকারি–বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে বাস্তবায়িত হবে।
বিশেষ সহকারী আরও বলেন, জাতীয় লজিস্টিক্স নীতিমালা–২০২৪–এর অংশ হিসেবে শতভাগ লজিস্টিক্স ডিজিটাল ট্র্যাকিং বাস্তবায়নের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে ডাক বিভাগ। এজন্য বিভাগের বর্তমান ডিএমএস (ডিজিটাল মেইল সিস্টেম) আরও উন্নত করা হচ্ছে, যাতে সার্ভার ডাউনসহ প্রযুক্তিগত সমস্যা না হয়।
ই–কমার্স খাতে আস্থা ফিরিয়ে আনতে ফয়েজ তৈয়্যব জানান, প্রতারণা রোধে সরকার একটি নতুন উদ্যোগ নিয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে তৈরি হয়েছে সেন্ট্রাল লজিস্টিক ট্র্যাকিং প্ল্যাটফর্ম। এই প্ল্যাটফর্মে ক্রেতার অর্থ সরাসরি বিক্রেতার অ্যাকাউন্টে না গিয়ে একটি ভার্চুয়াল অ্যাকাউন্টে থাকবে এবং পণ্য ডেলিভারির পর যাচাই–বাছাই শেষে সেই অর্থ বিক্রেতার কাছে যাবে। এর মাধ্যমে লোভনীয় অফারের নামে প্রতারণা ও অর্থ লোপাট বন্ধ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এ সময় তিনি আরও বলেন, ডাক জীবন বীমা ও ডাক সঞ্চয়পত্রকে আরও সহজ ও জনপ্রিয় করতে বিভাগ কাজ করছে। সঞ্চয়পত্রের সীমা বৃদ্ধি ও বিক্রয় প্রক্রিয়া সহজ করতে অর্থ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হবে বলেও জানান ফয়েজ তৈয়্যব।
তিনি জানান, গত অর্থবছরে ডাক বিভাগ তার ইএমটি সার্ভিসসহ বিভিন্ন সেবার মাধ্যমে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকার লেনদেন সম্পন্ন করেছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও লজিস্টিক সেবা জোরদারে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, আইসিটি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব আব্দুন নাসের খান ও মহাপরিচালক এস এম শাহাব উদ্দীন।
আরএইচটি/এআইএস