আশাবাদ বিএমইউ ভিসির
চিকিৎসা খরচ ও প্রেসক্রিপশনে ভিন্নতা কমাবে প্রমাণভিত্তিক ট্রিটমেন্ট
প্রমাণভিত্তিক চিকিৎসা পক্রিয়ায় একইসঙ্গে রোগীদের চিকিৎসা খরচ এবং প্রেসক্রিপশনে ভিন্নতা কমাবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম। তিনি বলেন, সঠিক তথ্য ও গবেষণার ভিত্তিতে চিকিৎসা করলে রোগীর জন্য সর্বোত্তম যত্ন নিশ্চিত করা সম্ভব। এছাড়াও প্রমাণভিত্তিক চিকিৎসা চর্চা প্রেসক্রিপশনের ভিন্নতা কমাবে, অপ্রয়োজনীয় চিকিৎসা ব্যয় হ্রাস করবে এবং রোগীর নিরাপত্তা বৃদ্ধি করবে।
রোববার (২৭ অক্টোবর) বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের মধ্যে যৌথ চুক্তি (এমইউ) স্বাক্ষর এবং ‘ডেভেলপমেন্ট অব ইভিডেন্স বেইসড প্রোটকলস ফর গাইনোকোলজিক্যাল ক্যান্সার ম্যানেজমেন্ট’ শীর্ষক এক কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
কর্মশালায় গাইনোকোলজিক্যাল ক্যান্সার ব্যবস্থাপনার জন্য প্রমাণভিত্তিক প্রোটোকল উন্নয়নের ওপর জোর দেওয়া হয়। এছাড়াও বিএমইউ এবং হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের মধ্যে একটি হয়। এই চুক্তির লক্ষ্য হলো গাইনিকোলজিক্যাল ক্যান্সার চিকিৎসার উন্নয়ন, চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞদের বিনিময় কর্মসূচি, প্রশিক্ষণ এবং যৌথ গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা। এই সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশে গাইনিকোলজিক্যাল ক্যান্সার চিকিৎসা ও প্রিসিশন অনকোলজির ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।
অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেন, প্রমাণভিত্তিক চিকিৎসায় সর্বোত্তম গবেষণার প্রমাণ, বিশেষজ্ঞদের অভিজ্ঞতা এবং রোগীর অধিকার বিবেচনা করে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। সঠিক তথ্য ও গবেষণার আলোকে চিকিৎসা নিশ্চিত করলে অপ্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও প্রেসক্রিপশনের ভিন্নতা কমানো সম্ভব, এমনকি রোগীর মৃত্যুহারও কমানো যায়। বাংলাদেশ মেডিকেল ইউনিভার্সিটি ২০২৫ সালের জন্য ওয়ার্ল্ড এভিডেন্স-বেইসড হেলথকেয়ার ডে কর্তৃক আনুষ্ঠানিকভাবে এভিডেন্স অ্যাম্বাসেডর হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, বর্তমানে চিকিৎসাবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো প্রিসিশন মেডিসিন। এটি রোগীর জিনগত বৈশিষ্ট্য, পরিবেশ এবং জীবনযাত্রার ভিন্নতার ওপর ভিত্তি করে চিকিৎসা নিশ্চিত করে। এর মূল লক্ষ্য হলো প্রতিটি রোগীর জন্য সঠিক ডোজ, সঠিক সময়ে এবং সঠিক চিকিৎসা প্রদানের মাধ্যমে সর্বোত্তম ফলাফল পাওয়া। বিশেষ করে ক্যান্সারের মতো জটিল রোগে প্রমাণভিত্তিক চিকিৎসা অত্যন্ত কার্যকর।
উপাচার্য বলেন, প্রমাণভিত্তিক চিকিৎসা পদ্ধতি শুধুমাত্র চিকিৎসার মান বৃদ্ধি করে না, রোগীর জীবনমান উন্নয়নেও সহায়তা করে। এমন কার্যক্রমের মাধ্যমে আমরা চিকিৎসাবিজ্ঞানের এই যুগে দেশে মানসম্মত এবং তথ্যভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পারব।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, বর্তমান জ্ঞান-বিজ্ঞানের যুগে প্রমাণভিত্তিক চিকিৎসার গুরুত্ব অপরিসীম। আমাদের প্রত্যেক চিকিৎসককে গবেষণালব্ধ তথ্য এবং বৈজ্ঞানিক প্রমাণের ভিত্তিতে রোগীকে সঠিক চিকিৎসা দিতে হবে। এটি শুধু রোগীর জন্য সর্বোত্তম যত্ন নিশ্চিত করবে না, বরং অপ্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও ব্যয়ও কমাবে।
হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের অধ্যাপক ডা. আন্নেক্যাথরিন গুডম্যান বলেন, ইভিডেন্স বেইসড মেডিসিন সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে, ঝুঁকি মূল্যায়ন করতে এবং চিকিৎসার মান উন্নত করতে গুরুত্বপূর্ণ।
বিশেষ অতিথি অধ্যাপক ডা. সাবেরা খাতুন বলেন, এই ধরনের কর্মশালা দেশের সব মেডিকেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হওয়া উচিত। এটি আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা, চিকিৎসা পেশা, চিকিৎসক ও রোগীর জন্য কার্যকর এবং আলোকিত পদ্ধতি।
কর্মশালায় ক্লিনিক্যাল অনকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মো. আকরাম হোসেন, ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যাপক মো. আহসান হাবিব এবং অন্যান্য বিজ্ঞানীরা বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
কর্মশালার সঞ্চালনা করেন ডা. মেহের নিগার ও ডা. মওয়া পারভিন। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ডা. ফৌজিয়া হোসেন। আয়োজনের সার্বিক সহযোগিতা করেন ডা. নূর-ই ফেরদৌস ও ডা. ফারজানা শারমিন।
টিআই/এমএসএ