ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, আমরা মনে করি সনাতন পদ্ধতি থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। আমাদের একটি সবার ঢাকা অ্যাপ আছে। ডিএনসিসির আওতাধীন যেকোনো সমস্যা বিষয়ে নাগরিকরা এখানে অভিযোগ জানাতে পারবেন। আগে ম্যানহোলের ঢাকনা না থাকলে, সড়ক বাতি না জ্বললে বিষয়টি খবরের মাধ্যমে জানতে হতো। কিন্তু এখন আছে সবার ঢাকা অ্যাপ। এখন জনগণই তাদের হাতে থাকা মোবাইলে অ্যাপটি ব্যবহার করে যেকোনো অভিযোগ জানাতে পারবেন। এর মাধ্যমে জনগণই মেয়রের ভূমিকা পালন করতে পারবেন।

সোমবার (২১ জুন) বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের উদ্যোগে 'শক্তিশালী ঢাকা সিটি করপোরেশন: নারী কাউন্সিলরদের ভূমিকা' শীর্ষক ভার্চুয়াল মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

আতিকুল ইসলাম বলেন, অ্যাপের মাধ্যমে যেকেউ সমস্যার বিষয়ক ছবি তুলে আমাদের কাছে পাঠালে, দায়িত্বে যারা আছেন তারা সঙ্গে সঙ্গে সেই সমস্যার সমাধান করে দেবেন। যারা দায়িত্বে আছেন তাদেরকে আমি নির্দেশ দিয়ে দিয়েছি একটি ম্যানহলের ঢাকনা, রোড লাইট, আবর্জনা এমন ধরনের সমস্যা সমাধানে যেন বেশি সময় না লাগে। এসব সমস্যার বিষয়ে আমার কাছে নোটিফিকেশন আসার আগেই যেন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। এমন জবাবদিহিতার মাধ্যমে আমরা সিটি করপোরেশনকে আনতে চেষ্টা করছি।

তিনি আরও বলেন, এই সিটিতে শুধু মেয়র না জনগণকেও মেয়রের ভূমিকা পালন করতে হবে। এই সিটিতে শুধু মেয়র সবকিছু করবে তা কিন্তু না। নাগরিক হিসেবে সবারই দায়িত্ব পালন করতে হবে। আমি খাল পরিষ্কারে গিয়েছিলাম গোদাইনাল খালে, সেখান থেকে ৩৬টি সোফা সেট উদ্ধার করেছি, এছাড়া ৩৩টি জাজিম, পরিত্যক্ত টেলিভিশন, ফ্রিজ, ৮০ ট্রাক অন্যান্য আবর্জনা খালে পাওয়া গেছে।এসব এখানে কারা ফেলল? এসব ময়লা আবর্জনা আমরাই ফেলেছি এখানে। কিন্তু যখন জলাবদ্ধতা হচ্ছে তখন গালি শুনছে মেয়র আর কাউন্সিলররা। তাই আমাদের সবাইকে এসব বিষয়ে নিজ নিজ জায়গা থেকে সচেতন হতে হবে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, সবার ঢাকা অ্যাপটি গুগল প্লে-স্টোর থেকে ডাউনলোড ও ইনস্টল করে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে যেকেউ এটি ব্যবহার করতে পারবেন। অ্যাপটির মাধ্যমে ডিএনসিসি এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা, না জ্বলা সড়কবাতি, বর্জ্য, ড্রেনেজ, মশা, অবৈধ দখলসহ বিভিন্ন বিষয়ে অভিযোগ বা মতামত সরাসরি পাঠাতে পারবেন নগরবাসী। মোবাইলে ছবি তোলার পর সেন্ড করলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে যাবে। সিটি করপোরেশনের প্রধান কার্যালয়সহ বিভিন্ন জোনে দায়িত্বপ্রাপ্তরা প্রতিটি অভিযোগ ও মতামত দেখতে পারবেন। অভিযোগের ধরণ বিশ্লেষণ করে সিটি করপোরেশন সমাধানের যে উদ্যোগ নেবে, সেটিও জানা যাবে। 

সমস্যার সমাধান হলে অভিযোগকারীও স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিষয়টি জানতে পারবেন উল্লেখ করে মেয়র বলেন, কোথাও ড্রেনেজ লাইনে সমস্যার কারণে জলাবদ্ধ হয়ে আছে, কোন সড়কে একটি বাতি নষ্ট, বর্জ্য অপসারণে গাফিলতি, ম্যানহোলের ঢাকনা না থাকা, ফুটপাত দখল, চলতি পথে আবর্জনার স্তূপ; এমন বিভিন্ন সমস্যায় বিভিন্ন সময় নাগরিকদের পড়তে হয়। এমনও হয় দীর্ঘদিন তারা এমন সমস্যার কোনো সমাধানই পান না, পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও এ বিষয়ে জানতে পারেন না। নাগরিকদের এমন সব সমস্যার সমাধান দিতেই মেয়রের নির্দেশে এই সবার ঢাকা অ্যাপটি চালু হয়েছে। এর মাধ্যমে যেকোনো অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি সমাধান পাচ্ছেন নগরবাসী।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের উদ্যোগে 'শক্তিশালী ঢাকা সিটি করপোরেশন: নারী কাউন্সিলরদের ভূমিকা' বিষয়ক ভার্চুয়াল মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম। এছাড়া স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্মসচিব (নগর উন্নয়ন-২ অধিশাখা) সায়লা ফারজানা, মহিলা পরিষদের সহ-সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত আন্দোলন সম্পাদক রেখা চৌধুরীসহ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মহিলা কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।

এএসএস/জেডএস