স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. জিহানুল আলিমের (৫৬) রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। রাজধানীর বড় মগবাজার এলাকার পিয়ারাবাগের নিজ বাসায় মারা যান তিনি। সোমবার দুপুরে তার মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যরা। স্ত্রীর দাবি, তিনি স্ট্রোক করে মারা গেছেন। তবে চিকিৎসক বলছেন, তার গলায় দাগ আছে, ফাঁস লেগে তার মৃত্যু হয়েছে। তবে সেটি আত্মহত্যা নাকি হত্যা তা এখনই বলা যাচ্ছে না।   

সোমবার (২১ জুন) দুপুর পৌনে ৩টায় ডা. জিহানুল আলিমকে অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, নিহতের স্ত্রী ফারহানা আলী টিকিট কাউন্টারে গিয়ে বলেন, আমার স্বামী স্ট্রোক করেছেন। জরুরি বিভাগের চিকিৎসককেও তিনি একই কথা বলেন। পরে ইসিজি করতে গেলে মৃতের গলায় রশির দাগ পাওয়া যায়। এরপর চিকিৎসক পুলিশ কেস-এর সিল দেন।

হাসপাতালের চিকিৎসক জানান, মৃতের গলায় রশির দাগ দেখে মনে হয়েছে ফাঁস লেগেই তার মৃত্যু হয়েছে। বাকি বিষয় থানা পুলিশ দেখবে।

এ বিষয়ে পরে আবার নিহতের স্ত্রী ফারহানা আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি তখন কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

নিহতের ভাই অবসরপ্রাপ্ত নৌবাহিনীর কমান্ডার জহিরুল আলিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, জিহানুল দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন। তাকে আমরা ভালো ডাক্তার দেখানোর কথা বলেছি। তবে কী কারণে বা কীভাবে তার মৃত্যূ হলো সে বিষয়ে কিছু বলতে পারব না।

তিনি বলেন, জিহানুল হাতিরঝিল থানার বড়মগবাজার এলাকার পিয়ারাবাগের ৫৮১ নম্বর ভবনের ৫ম তলার নিজ বাসায় থাকতেন। আমাদের গ্রামের বাড়ি পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর থানায়।

এদিকে দায়িত্বশীল একটি সূত্র বলছে, গত ১০ মাস ধরে স্বাস্থ্য অধিদফতরে ওএসডি ছিলেন ডা. জিহানুল। সর্বশেষ তিনি স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রোগ্রাম ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের ওই কর্মকর্তাকে অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আমরা হাতিরঝিল থানাকে খবর দিয়েছি। তারা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।

হাতিরঝিল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ইদ্রিস আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি, তিনি অনেক টাকা ঋণ করেছিলেন। এক পর্যায়ে তিনি হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

এসএএ/এসকেডি/জেএস