জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে গত শনিবার (৮ নভেম্বর) রাত ৮টায় অনুষ্ঠিত হয় ঊর্ধ্বতন বাছাই বোর্ড (এসএসবি) সভা। সভায় মৎস্য ক্যাডারের জ্যেষ্ঠ ৯ কর্মকর্তাকে বাদ দিয়ে ১০ম থেকে ১২তম কর্মকর্তাদের পদোন্নতির সুপারিশ করা হয়। এতে একদিকে যেমন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা বঞ্চিত হচ্ছেন, অন্যদিকে প্রশ্ন উঠেছে এই পদোন্নতির প্রক্রিয়া নিয়ে।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বিসিএসের ১৭তম ব্যাচের কর্মকর্তারা ১৯৯৮ সালে চাকরিতে যোগ দেন। নিয়ম অনুযায়ী উপপরিচালক হিসেবে দুই বছর পূর্ণ করার পর তারা পরিচালক (তৃতীয় গ্রেড) পদের জন্য যোগ্য বিবেচিত হন।

তথ্য অনুযায়ী, এক থেকে নবম ক্রমিকে থাকা কর্মকর্তাদের বাদ দিয়ে ১০ম থেকে ১২তম পর্যন্ত কর্মকর্তাদের এসএসবি আয়োজনের জন্য মন্ত্রণালয় গত ১৯ আগস্ট ও ১৮ সেপ্টেম্বর প্রস্তাব পাঠায়। তবে প্রথম ৯ কর্মকর্তার প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র সময়মতো না পৌঁছানোয়, কেবল ক্রমিক ১০ থেকে ১২ পর্যন্ত কর্মকর্তাদের জন্য এসএসবি অনুষ্ঠিত হয়।

এই সিদ্ধান্তে মৎস্য ক্যাডারের মধ্যে অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। কর্মকর্তারা মনে করছেন, এতে মেধাক্রমে আগে থাকা কর্মকর্তারা গ্রেডেশনে পিছিয়ে পড়বেন। এরফলে পরে যোগদান করা কর্মকর্তারা তাদের সিনিয়রদের নিয়ন্ত্রণে আসবেন, যা চাকরিজীবনে অসম্মান ও মানসিক কষ্টের কারণ হতে পারে।

সূত্র জানায়, প্রথম ৯ কর্মকর্তার এনএসআই রিপোর্ট না পাওয়ায় তাদের এসএসবি হয়নি। রিপোর্ট পাওয়া মাত্র প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটি মন্ত্রণালয়ের ইতিহাসে এক বিরল ঘটনা। তাদের প্রশ্ন– রিপোর্ট আসা না আসার বিষয়টি কেন কর্মকর্তাদের ওপর প্রভাব ফেলবে? ‘এখানে তো বাদ পড়া কর্মকর্তারাই ভুক্তভোগী’–মন্তব্য করেন এক কর্মকর্তা।

বঞ্চিত ৯ কর্মকর্তা হলেন– মৎস্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) এস এম রেজাউল করিম, পরিচালক (অভ্যন্তরীণ মৎস্য) ড. মোতালেব হোসেন, পরিচালক (ব্লু ইকনোমি) সাজদার রহমান, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. খালেদ কনক, সিলেট বিভাগের পরিচালক আসাদুল বাকী, চট্টগ্রাম বিভাগের পরিচালক আনোয়ার হোসেন, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (মৎস্য, পরিকল্পনা ও জরিপ) সাহেল আলী, চট্টগ্রাম মৎস্য অধিদপ্তরের পরিচালক (সামুদ্রিক মৎস্য) ড. মঈন উদ্দিন আহমেদ এবং পরিচালক সাইফুদ্দিন ইয়াহিয়া।

তারা সবাই গত বছরের ২০ ডিসেম্বর পরিচালক পদের যোগ্যতা অর্জন করেন। কিন্তু বাদ দিয়ে পদোন্নতির জন্য বিবেচিত হয়েছেন সাভারের মৎস্য প্রশিক্ষণ একাডেমির পরিচালক অলক কুমার সাহা, মৎস্য অধিদপ্তরের পরিচালক মনিরুল ইসলাম ও খুলনা বিভাগের পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম– যারা চলতি বছরের ৩০ আগস্ট যোগ্যতা অর্জন করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ইমাম উদ্দীন কবীর বলেন, এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। যা কিছু হয়েছে, সেটা এসএসবির সিদ্ধান্তে হয়েছে।

তবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. এহছানুল হককে বারবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি। এ ছাড়া জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ, পদোন্নতি ও প্রেষণ অনুবিভাগের যুগ্ম সচিব মিয়া মো. আশরাফ রেজা ফরিদীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

এমএম/বিআরইউ