তহবিল আত্মসাৎ, জালিয়াতি ও অর্থ পাচারের অভিযোগে বিসিএস (প্রশাসন) কল্যাণ বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের বহিষ্কৃত প্রশাসনিক কর্মকর্তা এস এম জাহিদুল ইসলাম ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বুধবার (১২ নভেম্বর) দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালে অফিস সহায়ক হিসেবে সমিতিতে যোগ দেওয়া জাহিদুল ইসলাম পরে প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি পান। এ সময় তিনি অফিসের ক্যাশবই, চেকবই, দলিল, রেজিস্টার ও ব্যাংক হিসাব পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন। এ সুযোগে তিনি সদস্যদের কিস্তি বাবদ প্রদত্ত পে-অর্ডারের টাকা অনুমোদিত ব্যাংক হিসাবের পরিবর্তে নিজের নিয়ন্ত্রণে থাকা সোনালী ব্যাংক, রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্স শাখায় “প্রকল্প পরিচালক, বিসিএস (প্রশাসন) কল্যাণ বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেড” নামে একটি অ্যাকাউন্টে জমা করতেন। ওই অ্যাকাউন্ট থেকে বিভিন্ন সময়ে প্রায় দুই কোটি টাকারও বেশি অর্থ আত্মসাৎ করেন তিনি। এছাড়া ২০২৫ সালের এপ্রিল ও জুলাই মাসে সদস্যদের প্লট রেজিস্ট্রেশনের ভ্যাট, কর ও অন্যান্য খাতে প্রদত্ত ৯ কোটি ৫৬ লাখ ৩২ হাজার টাকার মধ্যে প্রায় ৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকার কোনো হিসাব দেননি বলে অভিযোগ রয়েছে।

দুদক থেকে পাওয়া তথ্যানুসারে, মাত্র ৪০ হাজার টাকা বেতনের এ কর্মকর্তা ও তার পরিবারের নামে বিপুল অবৈধ সম্পদের প্রমাণ মিলেছে। এর মধ্যে রয়েছে —কুড়িগ্রাম জেলার মোগলবাসা ইউনিয়নের মালভাঙ্গা মৌজায় প্রায় এক একর জমি, ঢাকার বড় কাঁঠালদিয়ায় ২ কোটি ৪ লাখ টাকার জমি, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ১ কোটি ২৫ লাখ টাকার ফ্ল্যাট এবং একাধিক গাড়ি রয়েছে।

২০২৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ভোরে রাজধানীর নিউ ইস্কাটনস্থ বিআইএএম ভবনে সমিতির অফিসে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র পুড়ে যায় এবং পিয়ন আব্দুল মালেক ও ড্রাইভার ফারুক হোসেন নিহত হন। ওই ঘটনায় হাতিরঝিল থানায় দায়ের করা হত্যা ও বিস্ফোরণ মামলায় জাহিদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগে একাধিক ফৌজদারি মামলা দায়ের হয়েছে বলে জানা গেছে।

আরএম/এসএম