মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী ফেরানোর অনুরোধ পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে মালয়েশিয়ার হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ
মালয়েশিয়া থেকে দেশে এসে করোনায় আটকে পড়া বাংলাদেশি কর্মীদের ফিরিয়ে নিতে দেশটিকে অনুরোধ করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। সেইসঙ্গে দেশটিতে নতুন বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য শ্রমবাজার খুলে দিতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৮ জানুয়ারি) ঢাকায় নিযুক্ত মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হাজনাহ হাশিম বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় প্রতিমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
বিজ্ঞাপন
প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার সংক্রান্ত সকল জটিলতা নিরসনে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়কে সহযোগিতা করার জন্য হাইকমিশনারকে অনুরোধ করেন।
জবাবে হাইকমিশনার হাজনাহ হাশিম বাংলাদেশি কর্মীদের ফিরিয়ে নেওয়ার আশ্বাস দেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, খুব দ্রুতই এসব সমস্যার সমাধান হবে।
বিজ্ঞাপন
গত বছর সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে মালয়েশিয়ায় করোনার বিস্তার ঠেকাতে রিকভারি মুভমেন্ট কন্ট্রোল অর্ডার (আরএমসিও) জারি করা হয়। এতে দেশটিতে থাকা অনিবন্ধিত অভিবাসীদের মধ্যে নতুন করোনা সংক্রমিতের ক্লাস্টার চিহ্নিত হওয়ার পর বাংলাদেশসহ প্রায় ১২টি দেশের নাগরিকদের মালয়েশিয়া প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। যা গত ৩১ ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল।
অন্যদিকে বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানির অন্যতম বাজার মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো বন্ধ ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে। বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার একটি সংঘবদ্ধ চক্রের একচেটিয়া বাজার নিয়ন্ত্রণের অভিযোগে হঠাৎ কর্মী নেওয়া বন্ধ করে দেয় দেশটি।
পরে অবশ্য ঢাকার কূটনৈতিক তৎপরতায় দেশটি বাংলাদেশিদের জন্য শ্রমবাজার খোলার আশ্বাস দেয়। এ নিয়ে ঢাকা-কুয়ালালামপুরের মধ্যে বেশ কয়েকবার মন্ত্রী ও সচিব পর্যায়ের সফর বিনিময় এবং জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করা হলেও এখন দেশটিতে বাংলাদেশিদের জন্য শ্রমবাজার বন্ধ রয়েছে। ২০১৯ সালের শেষের দিকে বাংলাদেশিদের জন্য দেশটিতে শ্রমবাজার খুলে দেওয়া নিয়ে আশার আলো দেখা যায়। তবে হঠাৎ করে দেশটির ক্ষমতার পালাবদলে বাংলাদেশিদের জন্য খোলেনি শ্রমবাজার।
প্রতিমন্ত্রী হাইকমিশনারকে জানান, স্বাধীনতার পর থেকে মালয়েশিয়া বাংলাদেশের বিশ্বস্ত বন্ধু হিসেবে পাশে ছিল। বাংলাদেশি কর্মীরা দেশের এবং মালয়েশিয়ার অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন বলে হাইকমিশনারকে অভিহিত করেন শাহরিয়ার আলম।
এ সময় প্রতিমন্ত্রী তথ্য-প্রযুক্তি, স্বাস্থ্যখাত, শিক্ষা, বাণিজ্য, এনার্জি ও ভ্রমণ খাতে দুই দেশের ভালো সম্ভবনার কথা তুলে ধরেন। একইসঙ্গে তিনি মালয়েশিয়াকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। এছাড়া শাহরিয়ার আলম দেশটিতে বাংলাদেশি পণ্যে আরও শুল্ক সুবিধা দিতে হাইকমিশনারকে অনুরোধ করেন।
বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থী ইস্যুতে দেশটির শক্তিশালী রাজনৈতিক সমর্থনের প্রশংসা করার পাশাপাশি আসিয়ান সদস্য হিসেবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সহযোগিতা কামনা করেন। প্রতিমন্ত্রী হাইকমিশনারকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
এনআই/এইচকে