নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের কারখানায় (সেজান জুসের কারখানা) অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।

কমিশন বলছে, একের পর এক অগ্নিকাণ্ডে নিহত হওয়ার ঘটনা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। মালিকপক্ষের অবহেলায় আটকেপড়া অসহায় শ্রমিকদের মৃত্যুর দায় মালিকপক্ষ কোনোভাবেই এড়াতে পারে না। এটি মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।

পাশাপাশি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এ ভয়ানক অগ্নিকাণ্ডের সঠিক কারণ উদঘাটন করে জড়িতদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা ও নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে মালিকপক্ষ থেকে উপযুক্ত অর্থসহায়তা দেওয়া সুনিশ্চিত করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরকে আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।

শুক্রবার (৯ জুলাই) জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা ফারহানা সাঈদ স্বাক্ষরিত বার্তায় এতথ্য জানানো হয়।

কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম এক শোকবার্তায় নিহতদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন। একইসঙ্গে শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতিও গভীর সমবেদনা জানান।

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাশেম ফুডস অ্যান্ড বেভারেজের কারখানায় বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) বিকেলে আগুন লাগে, যা নিয়ন্ত্রণে আসে ২১ ঘণ্টা পর। অগ্নিকাণ্ডে এখন পর্যন্ত ৫২ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

মৃত শ্রমিকদের স্বজদের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয় যে চতুর্থ তলায় অবস্থিত কারখানার ম্যানেজার সবসময় ভেতরে শ্রমিকদের রেখে দরজায় তালা দিয়ে রাখে। এছাড়া, ভবনের পঞ্চম তলায় প্রচুর কেমিক্যালের উপস্থিতি, অগ্নি নির্বাপণ এবং জরুরি নির্গমনের ব্যবস্থা না থাকায় বিপুল সংখ্যক শ্রমিক নিহত হয়েছে।

কমিশন মনে করে, একের পর এক অগ্নিকাণ্ডে নিহত হওয়ার ঘটনা কোনো ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। প্রকাশিত সংবাদের আলোকে মালিকপক্ষের অবহেলায় শ্রমিকদের মৃত্যুর দায় কারখানার মালিকপক্ষ কোনোভাবেই এড়াতে পারে না। এটি মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।

সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এভয়ানক অগ্নিকাণ্ডের সঠিক কারণ উদঘাটন করে জড়িতদের কঠোর শাস্তির আওয়ায় আনা প্রয়োজন। কারখানায় নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে মালিকপক্ষ হতে উপযুক্ত অর্থসহায়তা দেওয়া সুনিশ্চিত করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরকে আহ্বান জানায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। এ পরিপ্রেক্ষিতে দায়িত্বশীলদের গাফিলতি আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে মনে করে কমিশন। এঘটনার যথাযথ তদন্তক্রমে জড়িতদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানায় কমিশন।

জেইউ/এসএম