নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাশেম ফুডস কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও আহতদের সুচিকিৎসার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)। একইসঙ্গে পূর্বের অগ্নিকাণ্ডগুলোর বিচার না হওয়ায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সংগঠনটি।

বাপা হাশেম ফুডস কারখানার ঘটনায় দোষীদের কঠোর এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কার্যকর করার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছে। রোববার (১১ জুলাই) সংগঠনটির সভাপতি সুলতানা কামাল ও সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিলের পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, করোনার ভয়াল থাবা ও লকডাউনে যখন মানুষের জীবন বিপর্যস্ত, তখন রূপগঞ্জের অগ্নিকাণ্ডে অর্ধশতাধিক মৃত্যুর ঘটনা অত্যন্ত হৃদয় বিদারক। এই অগ্নিকাণ্ডের দায় সরকার ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এড়িয়ে যেতে পারে না।

এতে আরও বলা হয়, ভবনটি নির্মাণের ক্ষেত্রে যথাযথ বিল্ডিং কোড মানা হয়নি। ভবনে নিজস্ব আগুন নেভানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও  জরুরি নির্গমনপথও ছিল না। অনেক শিশু শ্রমিক এই কারখানায় নিযুক্ত ছিল, যা সম্পূর্ণ বে আইনি। ভবনের ছাদের সিঁড়ি ও গেট মালিক পক্ষের নির্দেশে সব সময় তালাবন্ধ থাকতো বলে জানা যায়। এ কারণে হতাহতের সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।

সংগঠনটি বলেন, প্রতিটি শিল্প-কারখানায় অগ্নি নির্বাপণ ও জরুরি নির্গমন ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদফতর, দেশি-বিদেশি বেসরকারি কয়েকটি সংস্থা কাজ করে। কিন্তু তার মধ্যেই অর্ধশতাধিক প্রাণহানির এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করে, তাজরীন ফ্যাশন এবং রানা প্লাজার মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডগুলোর যথাযথ কারণ নিরূপণ ও তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। সেই সঙ্গে, এমন ঘটনা নিয়ন্ত্রণ এবং মোকাবিলা করার জন্য নেওয়া পদক্ষেপগুলোও সঠিকভাবে কার্যকর ভূমিকা পালন করেনি।

আমরা মনে করি, তদারককারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে ব্যর্থ। এ ব্যর্থতাকে পুঁজি করে দুষ্কৃতিকারীরা এ ধরনের বিপজ্জনক ও ব্যবহার অনুপযোগী/ শ্রমিক অবান্ধব এবং পরিকল্পিতভাবে ভবন নির্মাণ নিশ্চিত না করায় বার বার ঘটছে এ ধরনের দুর্ঘটনা। যার শিকার হচ্ছে দেশের খেটে খাওয়া নিরীহ মানুষ।

এমএইচএন/এমএইচএস