৫০ শতাংশ কার্যকর চাকরিকালের ভিত্তিতে শিক্ষকদের টাইমস্কেল বহাল রাখাসহ ৩ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যাণ সমিতি। দাবি আদায় না হলে আমরণ অনশনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (১১ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মুহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে সমিতি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এসব দাবি ও হুঁশিয়ারির কথা জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলন সমিতির মহাসচিব মো. মুনছুর আলী বলেন,  ‘শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড’ এবং তার মূল ভিত্তি হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা। এই বাস্তবতা অনুধাবন করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশে দুর্বল অর্থনৈতিক অবস্থার মধ্যে ১৯৭৩ সালে প্রায় ৩৭ হাজার বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কর্মরত শিক্ষকদের চাকরি জাতীয়করণ করেছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে অবহেলিত শিক্ষকদের সামাজিক মর্যাদা বাড়ানোর জন্য ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি শিক্ষক মহসমাবেশে ঘোষণার মাধ্যমে ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কর্মরত ১ লাখ ৪ হাজার ৭৭২ জন শিক্ষকের চাকরি জাতীয়করণ করে শিক্ষক ও তাদের পরিবারের মধ্যে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন কর্তৃপক্ষ অধিগ্রহণ করা প্রাথমিক শিক্ষকদের (চাকার শর্তাদি নির্ধারণ) বিধিমালা এস.আর.ও নং ৩১৫ আইন ২০১৩ প্রনয়ন করে গেজেট প্রকাশ করেন। সেই অনুযায়ী ২০১৪ সালের জুন মাস থেকে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা, টাইম স্কেলসহ অন্যান্য আর্থিক সুবিধাদি আজ পর্যন্ত দিয়ে আসছেন।

তিনি আরও বলেন, কিন্তু আকস্মিকভাবে বিধিমালার ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে ৮ বছর পর অর্থ মন্ত্রণালয় ২০২০ সালের আগস্ট মাসে একটি পরিপত্র জারি করে। যার ফলে টাইমস্কেল বাতিল করে অর্থ ফেরত নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। এতে প্রায় ৫০ হাজার শিক্ষক ও তাদের পরিবারের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা সৃষ্টি করা হয়েছে। এছাড়া জাতীয়করণ করা প্রাথমিক শিক্ষকদের জেষ্ঠ্যতা, পদোন্নতি ও টাইমস্কেল থেকে সম্পূর্ণভাবে বঞ্চিত হচ্ছে।

তাদের দাবিগুলো হলো- ২০২০ সালের আগস্ট মাসে অর্থ মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রটি প্রত্যাহার করে ৫০ শতাংশ কার্যকর চাকরিকালের ভিত্তিতে টাইমস্কেল বহাল রাখা; ৫০ শতাংশ কার্যকর চাকরিকালের ভিত্তিতে শিক্ষকদের জেষ্ঠ্যতা ও পদোন্নতি দেওয়া এবং অধিগ্রহণ করা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এসএমসি তৈরি করা প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পাওয়া প্রধান শিক্ষকদের নাম গেজেট থেকে বাদ পরায়, সেটি গেজেটে অন্তর্ভুক্ত করা

এসব দাবি আগামী ২২ জানুয়ারির মধ্যে আদায় না হলে আগামী ২৪ জানুয়ারি সব জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হবে। একইসঙ্গে ঢাকায় অবস্থান ও আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করা হবে।

এইচএন/জেডএস