চট্টগ্রামে পুলিশের বিশেষ ‘নৈশ বিদ্যালয়’
রাত সাড়ে ১১টা। সড়কের এক কোণায় দাঁড়িয়ে ২০ জন নিরাপত্তা প্রহরী। তারা অপেক্ষা করছেন তাদের পুলিশ শিক্ষকের। প্রতি রাতেই এই সময়ে ক্লাস হয়। ক্লাসে প্রহরীদের দায়িত্ব পালনের বিভিন্ন খুঁটিনাটি বিষয় সম্পর্কে জানান থানার ওসি।
বিভিন্ন বাসা-বাড়ি, মার্কেটের নিরাপত্তা প্রহরীদের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশে চালু হয়েছে ব্যতিক্রমী এই ‘নৈশ বিদ্যালয়’। বিপুল সংখ্যক নিরাপত্তা প্রহরীদের সচেতন করতে পারলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তারা গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারবেন বলে প্রত্যাশা পুলিশের।
বিজ্ঞাপন
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর ঢাকা পোস্টকে বলেন, সিকিউরিটি গার্ডদের সচেতন করার জন্য আমাদের এই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। যারা বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা, মার্কেটে নিরাপত্তার দায়িত্বে আছেন তারা তো আমাদেরকেই সহযোগিতা করছেন। তারা যদি দক্ষভাবে কাজ করেন, তাদের সঙ্গে যদি পুলিশের একটা নিবিড় যোগাযোগ হয়, তাহলে নিরাপত্তার কাজটা আরও সুন্দরভাবে করা যাবে।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে কাজটা নগরীর ডবলমুরিং থানা করছে। কিন্তু এই আইডিয়াটা বাকি ১৫টি থানাতেও বাস্তবায়নের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক থানা থেকেই এ বিষয়ে বেসরকারি সিকিউরিটি গার্ড বা নাইট গার্ডদের সঙ্গে যোগাযোগ এবং নিরাপত্তার ধারণা বাড়ানোর জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামের বিভিন্ন বাসা-বাড়ি এবং মার্কেটের নিরাপত্তা প্রহরীদের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য গত ৪ আগস্ট ডবলমুরিং থানা পুলিশ বিশেষ কার্যক্রম শুরু করে। প্রহরীদেরকে তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে বলার পাশাপাশি ঝুঁকিপূর্ণ সময়ে তাদের করণীয় সম্পর্কেও দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়। প্রতিদিন রাত ১০টার পর শুরু হয় এই নৈশ বিদ্যালয়। সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) নাম্বার ও ডিউটি অফিসারের নাম্বার দেওয়া হচ্ছে প্রহরীদের। এছাড়া জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কীভাবে যোগাযোগ করবে তা বলা হচ্ছে। বিশেষ পরিস্থিতি কীভাবে নিজেকে রক্ষা করে পুলিশকে অপরাধী সম্পর্কে তথ্য দেবে সেই বিষয়ে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে ডবলমুরিং থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, আমাদের পর তারাই তো নিরাপত্তা দেন এই নগরের। আমাদের চেয়ে তাদের সংখ্যা অনেক বেশি। আমাদের মতো রাত জেগে নগর পাহারা দেন তারাও। তাই তাদের আরেকটু সজাগ, আরেকটু সচেতন করতে পারলে আরও নিরাপদ হবে আমাদের শহর।
তিনি আরও বলেন, আমরা তাদেরকে সচেতন করি। বিশেষ পরিস্থিতিতে তাদের কর্তব্য কী, তারা পুলিশকে কীভাবে সহযোগিতা করতে পারেন- সে বিষয়ে তাদের সচেতন করার চেষ্টা করি। তাদের সংখ্যা কিন্তু অনেক। তারা পুলিশকে তথ্য দিলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ভালো সহায়ক হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
ডবলমুরিং থানার এই উদ্যোগের পর তা ১৬ থানাতেই বাস্তবায়নের নির্দেশ প্রদান করেন সিএমপি কমিশনার। শুক্রবার (৬ আগস্ট) রাত থেকে অন্যান্য থানাও এই কার্যক্রম শুরু করে। চট্টগ্রামের প্রত্যেক সিকিউরিটি গার্ডকে এই কার্যক্রমের আওতায় আনা হবে বলে জানান সিএমপি কমিশনার।
কেএম/এইচকে