দীর্ঘদিন পর আগামী বুধবার (১১ আগস্ট) থেকে চলমান ‘কঠোর বিধিনিষেধ’ শিথিল করছে সরকার। এদিন থেকে সড়কে পুনরায় চলবে গণপরিবহন। তবে সড়কপথে মোট পরিবহন সংখ্যার অর্ধেক চলাচল করবে। এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারির পর দূরপাল্লার পরিবহন চলাচলে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে শ্রমিকরা।

সোমবার (৯ আগস্ট) রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনাল ঘুরে শ্রমিকদের কর্ম-তৎপরতা দেখা গেছে।

বিধিনিষেধ শিথিলের খবরে গাবতলীতে চলছে দূরপাল্লা পরিবহনের ধোয়াসহ পরিষ্কারের কাজ। নিজ নিজ দায়িত্বে পরিবহন শ্রমিকরা তাদের গাড়িগুলো ঠিকঠাক করে নিচ্ছেন। কোনো কোনো গাড়ি নতুন রঙে রাস্তায় নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সবমিলে গাবতলী বাস টার্মিনালে কর্ম তৎপরতা বেড়েছে।

বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ায় খুশি পরিবহন খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকরা। তারা জানান, বিধিনিষেধের প্রভাবে এই খাতে প্রায় সব শ্রমিকরাই ঋণে জর্জরিত। সংসার চালাতে সবাইকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এবার অনেকটা স্বস্তি আসবে।

পরিবহন শ্রমিক রাশেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, সরকারের টানা কঠোর বিধিনিষেধে আমরা বিপদে পড়েছি। না খেয়ে অনেক দিন পার করেছি। আমরা কাজ করলে টাকা পাই, আর সেই টাকা দিয়েই সংসার চালাই।

দূরপাল্লার পরিবহনের ড্রাইভার মোজাম্মেল ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ। এতোদিন খুব কষ্ট করে চলতে হয়েছে। অনেক টাকা ঋণ করে ফেলেছি। গাড়ি চললে আর আমাদের কষ্ট হবে না। আমরা সরকারি নির্দেশনা মেনেই গাড়ি চালাব।

তিনি আরও বলেন, করোনায় মারা গেলে সমস্যা নেই কিন্তু ক্ষুধার যন্ত্রণা আর সহ্য হয় না। সংসার চালাতে পারি না। বাচ্চার দুধ কিনারও টাকা নেই। পুরো পরিবার নিয়ে অসহায় জীবন যাপন করতে হচ্ছে।

গত ৩ আগস্ট ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে সচিবালয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে চলমান কঠোর বিধিনিষেধের মেয়াদ ১০ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ১১ আগস্ট থেকে দোকানপাট, শপিংমলসহ গণপরিবহন খুলে দেওয়ার পাশাপাশি সব ধরনের সরকারি-বেসরকারি অফিস খুলে দেওয়া হবে।

পরে রোববার (৮ আগস্ট) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে বলা হয়েছে, বিধিনিষেধ শিথিলের পর সড়ক, রেল ও নৌ-পথে আসন সংখ্যার সমপরিমাণ যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন/যানবাহন চলাচল করতে পারবে।

উল্লেখ্য, দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখা এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় চলমান কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। 

এসআর/এমএইচএস