প্রকল্পে কেনাকাটায় সতর্ক থাকার পরামর্শ মন্ত্রীর
বিভিন্ন প্রকল্পে জিনিসপত্র কেনার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকার উপদেশ দিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। মন্ত্রী বলছেন, প্রকিউরমেন্টে যারা থাকবেন তাদের অনেক বেশি সাবধান হতে হবে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মালামাল ক্রয়ের বিষয়ে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের বর্তমান সচিব এখানে নতুন, আমিও নতুন। সচিব নতুন বলে বলছি, বিবিএসে কিছু কিছু কেনাকাটা করা হয়েছে গত তিন বছর আগে। ওই জিনিসগুলো স্টোরেজ করা আছে এবং এই মালামালগুলো ব্যবহারের জন্য সচিব ও ডিজিকে অনুরোধ করছি। কারণ যন্ত্রপাতির একটা নির্দিষ্ট বয়স আছে। এখন ২০২১ সাল কিন্তু মালামাল ক্রয় করা হয়েছে ২০১৯ সালে। প্রকল্পটি পাস হওয়ার পরপরই কেনাকাটা করা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় কোনো কিছু ক্রয় করে যেন কোনভাবেই নষ্ট না হয়, সেজন্য সঠিক সময়ে ক্রয় করা জরুরি। আগেও ক্রয় করবো না, পরেও ক্রয় করবো না, যথাসময়ে ক্রয় করে ব্যবহার করবো।’
বিজ্ঞাপন
সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান (বিবিএস) ভবনের অডিটোরিয়ামে জোনাল অপারেশন (প্রথম) প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন পরিকল্পনামন্ত্রী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিবিএস সচিব মোহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিবিএস মহাপরিচালক তাজুল ইসলাম। আগামী ২৫ থেকে ৩১ অক্টোবর জনশুমারির মূল শুমারি অনুষ্ঠিত হবে। এই এক সপ্তাহে সারাদেশের মানুষকে গণনার আওতায় আনা হবে বলে জানানো হয়।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘কোভিডজনিত কারণে আমরা শুমারির কাজটা করতে ১০ মাস পিছিয়ে গেছি। এ কাজটি পিছাতে সরকারপ্রধান থেকেও অনুমোদন নেওয়া হয়েছে। আমাদের অস্তিত্বের অন্যতম নিদর্শন হলো জনশুমারি। কাজটি সঠিকভাবে না হলে এ বিভগে নিয়ে সকলের মনে প্রশ্ন জাগবে। এজন্য যথাযথ উন্নয়ন করতে সবাইকে সঠিক সময়ে কাজ করতে হবে। রিয়েল এবং নির্ভুল তথ্য সংগ্রহ না করে জনশুমারি করা যাবে না। ফিল্ড পর্যায়ে যারা কাজ করবে বিশেষ করে তাদের অনেক সর্তক হতে হবে।’
বিজ্ঞাপন
জনশুমারি প্রকল্পের খরচের হিসেবে তিনি বলেন, দেশের ১৬ কোটি মানুষের জন্য এবার মাথাপিছু ১১০ টাকা করে খরচ হচ্ছে। যেহেতু শুমারিটা ১০ বছর পরপর করা হয়, সেহেতু প্রত্যেক বছরে ১০ টাকা করেও খরচ হয় না একজন নাগরিকের জন্য। মাসে এক টাকাও নয় ৮০ পয়সার মতো খরচ হয়। কিন্তু প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদনের সময় মনে হয়, মাথা গণনা করতে বিশাল টাকার প্রকল্প নেয়া হয়েছে। কিন্তু ১০ বছর পরপর শুমারি করা মাসে এক থেকে দেড় টাকা খরচ হয়। আমার মনে হয় মাস, বছর হিসেব করলে এটা ঠিক আছে। তারপরও সরকারি টাকা খরচে সবাইকে সাবধান হতে হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমি না খেয়ে টাকা বাঁচাতে বলবো না। খেতেও হবে হিসাবও করতে হবে। দুইটা একই সাথে মেইনটেন করতে হবে। প্রত্যেক টাকার ব্যয়ের হিসাব করতে হবে। আমাদের সরকার ব্যয়ে বিশ্বাসী। উন্নয়নের পেছনের ব্যয়টা অর্থনীতিকে চাকার মতো ঘুরায়। ব্যয় ছাড়া অর্থনীতি স্তীমিত হয়ে যাবে, শেষ হয়ে যায়। এজন্য বলি সবার প্রতি আমার আহ্বান, ব্যয় করতে সাবধান হতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমিও আমলাতন্ত্রে ছিলাম। দেখেছি, পাবলিকেশন ও প্রিন্টিংয়ে কিছু কিছু ব্যয় মাঝে মাঝে অপচয় হয়। যেমন ৮ থেকে ১০ বছর আগের প্রকল্পের খাতা, কলম এখনও আমার কাছে আছে। এটা দিয়ে এখন আর কোনো কাজ হয় না। এটা রাফ হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। দেখা যায় যে, ৫ বছর আগের প্রকল্পের জিনিসপত্র দিয়ে কষ্ট করে লিখছেন। এগুলো আমরা সব বুঝি। এগুলোর মাল যারা দেয় তারাও পয়সা কামাতে চায়। এজন্য ব্যয় করার ক্ষেত্রে, ‘উই শুড বি কেয়ারফুল’। প্রকিউরমেন্টে যারা থাকবেন তাদের অনেক বেশি সাবধান হতে হবে।
এসআর/এনএফ