কেমিক্যাল-এসিড মিশিয়ে তৈরি হচ্ছে মুখ ফর্সার ক্রিম
এসিড দিয়ে তৈরি হচ্ছে মুখ ফর্সা করার এসব ক্রিম
খোলাবাজার থেকে অনুমোদনহীন ও লেভেল ছাড়া কেমিক্যাল কিনে তাতে এসিড মিশিয়ে তৈরি হচ্ছে মুখ ফর্সা করার ক্রিম। এসব ক্রিম মুখে মাখলে ফর্সা হওয়া তো দূরের কথা বরং চর্মরোগসহ স্কিন ক্যান্সারের আশঙ্কা থাকে।
সোমবার (১৮ জানুয়ারি) পুরান ঢাকার একটি ক্রিম কারখানায় অভিযান চালায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়নর (র্যাব)। এদিন দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত লালবাগের হায়দার বক্স লেনের এক বাড়িতে এ অভিযান চলে।
বিজ্ঞাপন
অভিযানে র্যাব দেখতে পায়, বিপাসা কসমেটিকস এন্টারপ্রাইজ অনুমোদনহীন ও অনিরাপদ কেমিক্যাল ব্যবহার করে নানা ধরনের ক্রিম তৈরি করছে। তারা নিম্নমানের কাঁচামাল ব্যবহার করে এসব পণ্য উৎপাদন করত। পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিএসটিআই থেকে লাইসেন্স না নিয়েও অবৈধভাবে তাদের লোগো ব্যবহার করে নকল পণ্য তৈরি করে বাজারে বিক্রি করছিল। এসব অভিযোগে কারখানার কারিগরসহ প্রতিষ্ঠানের দুইজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। এছাড়াও নকল কসমেটিকস জব্দ করে কারখানাটি সিলগালা করে দিয়েছে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বিজ্ঞাপন
অভিযানে সহযোগিতা করেন র্যাব-৩, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশন (বিএসটিআই)। অভিযানে গ্রেফতাররা হলেন- মালিক পক্ষের প্রতিনিধি মোহাম্মদ নাসের (৪৯) ও কারিগর আনোয়ার শেখ (২৫)। এঘটনায় কারখানা মালিক মো. নাজিম উদ্দিনকে পলাতক দেখিয়ে লালবাগ থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেছে র্যাব।
অভিযানের বিষয়ে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু বলেন, তারা গরম পানির সঙ্গে ভ্যাসলিন, স্টারিক এসিড, বোরাস ও পালম্যাকসহ বিভিন্ন কেমিক্যাল মিশিয়ে এই ক্রিম তৈরি করত। কারখানায় তাদের কোনো কেমিস্টের দেখা মেলেনি। কারখানার ভেতরে ছোট একটি ল্যাবরেটরি বানিয়ে সেখানে কিছু জিনিসপত্র সাজিয়ে রাখা হয়েছে কিন্তু সেগুলোর ব্যবহার সম্পর্কে কিছুই জানতেন না তারা। ক্রেতারা এসব পণ্য ব্যবহার করলে বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানটি বিএসটিআইয়ের লাইসেন্স ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র দেখাতে পারেনি। কোন ধরনের সুরক্ষা সামগ্রী ব্যবহার না করে সম্পূর্ণ অনিরাপদ উপায়ে পণ্য তৈরি করা হতো। এছাড়াও কারখানায় শিশু শ্রমিকদের দিয়ে পণ্য তৈরির কাজ করাচ্ছে।
ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, পুরান ঢাকায় এমন আরও অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা বিভিন্ন ধরনের নকল পণ্য তৈরি করে বাজারজাত করছে। তাদের নকল পণ্য বাজারজাত করার নেটওর্য়াক খুবই শক্তিশালী। উৎপাদিত পণ্যগুলো দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের পাশপাশি রাজধানীসহ দেশের মার্কেটগুলোতেও বিক্রি হয়। যার ভুক্তভোগী আমাদের সমাজের সবাই।
এআর/ওএফ