করোনায় দুর্দশাগ্রস্ত অভিবাসীদের খাদ্য সহায়তা দিল রামরু-সিসিডিএ
কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলার অংশ হিসেবে দুর্দশাগ্রস্ত অভিবাসী, অভিবাসী পরিবার ও অনিচ্ছায় দেশে ফেরত আসা অভিবাসীদের মধ্যে জরুরি খাদ্য ও স্বাস্থ্য-সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করেছে রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস্ রিসার্চ ইউনিট (রামরু) এবং সেন্টার ফর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট অ্যাসিস্ট্যান্স (সিসিডিএ)।
স্ট্রেনদেনড্ অ্যান্ড ইনফরমেটিভ মাইগ্রেশন সিস্টেমস (সিমস্) প্রকল্পের অধীনে কুমিল্লা জেলার পাঁচটি উপজেলার ২৫টি ইউনিয়নে সামগ্রীগুলো বিতরণ করা হয়। গত ২১ আগস্ট থেকে বিভিন্ন ইউনিয়নে শুরু হওয়া এই বিতরণ কার্যক্রম শেষ হয়েছে গত ২ সেপ্টেম্বর।
বিজ্ঞাপন
খাদ্য সামগ্রী বিতরণের পাশাপাশি প্রতি ইউনিয়নে দুই দিন করে সচেতনতামূলক মাইকিং ও লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে নিরাপদ অভিবাসন, অভিবাসীদের টিকা গ্রহণের গুরুত্ব ও পদ্ধতি, নিয়ম মেনে কোয়ারেন্টাইন পালনসহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ বার্তা জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের অংশীদারদের (স্টেকহোল্ডার) স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চলছে সচেতনতামূলক বার্তাসহ মাস্ক বিতরণ।
কুমিল্লায় প্রকল্প এলাকার পাঁচটি উপজেলা হলো: আদর্শ সদর, সদর দক্ষিণ, চান্দিনা, মুরাদনগর ও দাউদকান্দি। কর্মসূচির আলোকে, উপজেলাগুলোর ২৫টি ইউনিয়নের প্রতিটিতে ২৫ জন দুর্দশাগ্রস্ত অভিবাসী, অভিবাসী পরিবার ও অনিচ্ছায় দেশে ফেরত আসা অভিবাসীদের জরুরি খাদ্য ও স্বাস্থ্য-সুরক্ষা সামগ্রী দেওয়া হয়। ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে চেয়ারম্যান, মেম্বার, ইউপি সচিবসহ সিমস্ প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীরা উপস্থিত থেকে উপকারভোগীদের মধ্যে এসব সামগ্রী বিতরণ করেন।
এছাড়া, মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট অভিষেক দাশ উপজেলার সদর ইউনিয়ন এবং জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস (ডেমো)-কুমিল্লার সহকারী পরিচালক দেবব্রত ঘোষ আদর্শ সদর উপজেলার দূর্গাপুর (উত্তর) ও সদর দক্ষিণ উপজেলার গলিয়ারা (দক্ষিণ) ইউনিয়নে সামগ্রী বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞাপন
জরুরি সামগ্রী বিতরণ বিষয়ে জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস-কুমিল্লার সহকারী পরিচালক দেবব্রত ঘোষ বলেন, সিমস্ প্রকল্প করোনাকালে দুর্দশাগ্রস্ত অভিবাসীদের মধ্যে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। সরকারের জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস-কুমিল্লার পাশাপাশি সিমস্ প্রকল্প অভিবাসীদের পাশে থাকবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সব অংশীদারদের (স্টেকহোল্ডার) এগিয়ে আসতে আহ্বান জানাই।
এ বিষয়ে হেলভেটাস বাংলাদেশর ফিনান্সিয়াল এডুকেশন অ্যান্ড বিজনেস ডেভেলপমেন্ট এক্সপার্ট খালিদ হোসাইন বলেন, সিমস্ প্রকল্পের মাধ্যমে নিরাপদ অভিবাসন বিষয়ে সচেতনতা, প্রতারিত অভিবাসী ও তাদের পরিবারকে আইনি সহায়তা এবং দেশে থাকা অভিবাসী পরিবারের সদস্যদের আর্থিক, স্বাক্ষরতা ও উদ্যোক্তা তৈরির ট্রেনিং প্রোগ্রামের মাধ্যমে তথ্যবহুল ও নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করা হবে।
কুমিল্লা জেলার আদর্শ সদর, সদর দক্ষিণ, চান্দিনা, মুরাদনগর ও দাউদকান্দি উপজেলার ২৫টি ইউনিয়নে সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কোঅপারেশন (এসডিসি) এবং হেলভেটাস বাংলাদেশের সহযোগিতায় রামরু ও সিসিডিএ এই সিমস্ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। অভিবাসীর অধিকার সুরক্ষা এবং নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করতে, প্রাথমিকভাবে তিন বছর মেয়াদি এ প্রকল্প নিরাপদ অভিবাসন বিষয়ে সচেতনতা তৈরি, প্রতারিত অভিবাসী ও তাদের পরিবারকে আইনি সহায়তা প্রদান এবং দেশে থাকা অভিবাসী পরিবারের সদস্যদের আর্থিক, স্বাক্ষরতা ও উদ্যোক্তা তৈরির ট্রেনিং প্রাপ্তিতে সহায়তা করবে।
জেডএস