বাজারে চাল ও সবজি

১৫ দিন পর সয়াবিন তেল কিনতে এসে রীতিমতো অবাক হয়ে যান ক্রেতা আব্দুল ওয়াদুদ। রাজধানীর কাঁঠাল বাগান বাজারের একটি দোকানে পাঁচ লিটারের তেলের বোতল নিয়ে ১৫ দিন আগে কেনা দাম দিয়েই হাঁটা শুরু করেন তিনি। দোকানদার তাকে আরও ১০০ টাকা দিতে বলেন! কেন? এমন প্রশ্ন করতে করতেই বোতলের গায়ে লেখা দাম দেখেন। শেষমেষ ১০০ টাকা দিয়ে গন্তব্যের দিকে হাঁটতে শুরু করেন!

ক্রেতা ওয়াদুদের মতে, ‘১৫-১৬ দিন আগে তীরের পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের বোতল ৫২৫ টাকা দিয়ে নিয়েছিলাম। দাম বাড়তেই পারে। তাই বলে ১৫ দিনের ব্যবধানে ১০০ টাকা! আসলে ক্রেতারা অসহায়, না কিনে উপায় কী?’

বিশ্ববাজারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গত ২০ দিনে দেশের বাজারেও লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে তেলের দাম। ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, কয়েকদিনের মধ্যে তেলের দাম আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কাঁঠাল বাগান বাজারের মুদি দোকানদার ঈসমাইল ট্রেডার্সের বিক্রেতা হানিফ জানান, গত কয়েকদিনে সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে সাত থেকে আট টাকার মতো বেড়েছে। আগামী কয়েকদিনের ব্যবধানে এ তেলের দাম আরও তিন থেকে চার টাকা বাড়তে পারে।

মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) কাঁঠাল বাগান বাজারে খোলা সয়াবিন তেল ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। আর বসুন্ধরা, রূপচাঁদা, তীর ও পুষ্টি ব্রান্ডের বোতলজাত পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের দাম রাখা হচ্ছে যথাক্রমে ৬৩৫, ৬৩০, ৬২৫ ও ৫৮০ টাকা।

তেলের সঙ্গে বাজারে ক্রেতাদের অস্বস্তিতে ফেলছে চালের দামও। মাস দুয়েক আগে থেকে চালের দাম বাড়লেও সেটি এখনও কমেনি। বরং গত কিছুদিন থেকে কেজিতে কয়েক পয়সা করে বাড়ছে।

দোকানে মাছের সমাহার

খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজারে ভারতের চালের আমদানি না বাড়ানো গেলে আরও কিছু দিন চালের দামে এই অস্বস্তি বিরাজ করবে।

কাঁঠাল বাগান বাজারের চালের ব্যবসায়ী সুমন ঢাকা পোস্ট-কে বলেন, ‘ভারত থেকে সরকার চাল আমদানির সুযোগ করে দিলেও এখনও বড় ব্যবসায়ীরা সেখান থেকে সেই অর্থে চাল আমদানি শুরু করেনি। এর জন্য চালের দাম কমছে না। ভারত থেকে বেশি করে চাল আমাদানি না বাড়ালে সিজনের আগে দাম কমবে না।’

কাঁঠাল বাগান বাজারে মোটা গুটিস্বর্ণা ৪৪ টাকা, পাইজাম ৪৭, নাজির ৫৫-৬২, মিনিকেট ৬০-৬২, বাসমতি ৬৮ টাকা করে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

তেল-চালের দামে ক্রেতাদের পকেট ফাঁকা হলেও বাজারে শীতের সবজি পাওয়া যাচ্ছে ঠান্ডা দামেই। বাজার ঘুরে দেখা যায়, শিম ৩০ টাকা, টমেটো ৩০-৩৫, ফুলকপি ২০-২৫, গাজর ৩০-৩৫, শালগম ২৫-৩০, আলু ২৫, লাউ ৩০-৪০, বেগুন ৩০-৪০, মুলা ২০ টাকা ও কাঁচা মরিচের কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

সবজির দামে স্বস্তির কথা জানিয়ে জাকির হোসেন নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘সবজির দাম এখন মানুষের নাগালের মধ্যে আছে। তবে চাল-তেলে সেটা খরচ হয়ে যাচ্ছে।’

সবজির সঙ্গে মাছের বাজারেও স্বস্তি দেখা গেছে। মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি বড় আকারের তেলাপিয়া ১৩০-১৪০ টাকা, কাতল ২৫০, পাঙ্গাস ১৩০, রুই ২০০-২২০, মৃগেল ২০০ এবং কই ১৮০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এনআই/এফআর